সাংবাদিক, মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়নকর্মী ফারুখ ফয়সল আর নেই। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। ফারুখ ফয়সলের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আসক জানায়, ফারুখ ফয়সল ছিলেন বাংলাদেশের মানবাধিকার আন্দোলনের একজন নিবেদিতপ্রাণ, সচেতন ও দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব। বিশেষত, মত প্রকাশের অধিকার এবং প্রান্তিক নাগরিকের উন্নয়ন বিষয়ে তার অবদান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিম-লে সমাদৃত ছিল।
ফারুখ ফয়সলের ছোট বোন স্নিগ্ধা আহসান (স্বপ্না) জানান, ফারুখ ফয়সল বছরখানেক ধরে অসুস্থ ছিলেন। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে গত রোববার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। গতকাল ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডের মসজিদে ফারুখ ফয়সলের জানাজা শেষে মরদেহ বগুড়ায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, বগুড়া শহরে ফারুখ ফয়সলের পৈতৃক বাড়ি। তার বাবা মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ মোহসীন আলী দেওয়ান। চার দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা, মিডিয়া উন্নয়ন, মত প্রকাশ আন্দোলনের স্বাধীনতা এবং উন্নয়ন যোগাযোগ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন ফারুখ ফয়সল। সর্বশেষ ২০২৩ সালের নভেম্বরে তিনি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক হন। তিনি এর আগে তথ্য ও মত প্রকাশের অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল ১৯-এর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক ছিলেন।
এশিয়া, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মসূচি পরিচালনা করেছেন। এর কাজের ক্ষেত্রে তিনি সব সময় জেন্ডার সমতাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।
গতকাল আসকের চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না স্বাক্ষরিত এক বার্তায় বলা হয়, ফারুখ ফয়সল ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফারুখ ফয়সল ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ মোহসীন আলী দেওয়ানের সন্তান। পিতার আদর্শ ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি আজীবন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচারের পক্ষে কাজ করে গেছেন।