ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আমন জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ধানের ফলন নিয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
কৃষকরা জানায়, ধান ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কীটনাশক প্রয়োগসহ বিভিন্ন ফাঁদ পাতলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে ধানের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
এদিকে ইঁদুরের হাত থেকে আমন ধান বাচাঁতে স্থানীয় কৃষি অফিসের লোকজন তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা ফসল রক্ষায় ইঁদুরের আক্রমণ প্রতিরোধে নিরলসভাবে মাঠে কাজ করার পাশাপাশি কৃষকদের নানা রকম পরামর্শ দিয়ে আসছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৪শ ১২ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধান রোপণের পর থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশায় স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। কিছুদিনের মধ্যে আবাদকৃত ধানের জমিগুলো সবুজে ভরে উঠেছে। বর্তমানে ধানের জমিতে শীষ বের হতে শুরু করেছে। এই মুহুর্তে জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। দলবদ্ধ ইঁদুর ধান ক্ষেতে গিয়ে শীষ আসা ধানগাছ কেটে ফেলায় সেই স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার কালিকাপুর, দ্বিজয়পুর, হীরাপুর,সাতপাড়া, আদমপুর, কুসুমবাড়ি, তুলাবাড়ি, তারাগনসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দিগন্তজুড়ে সবুজের সমারোহ হয়ে আছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে আমন ধানের ক্ষেত। অনেক আমন জমিতে শীষ আসতে শুরু করেছে। তবে অনেক জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দেওয়ায় শঙ্কায় পরেছে কৃষকেরা।
কালিকাপুর গ্রামের কৃষক আবুল খায়ের বলেন, এ মৌসুমে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। ইতিমধ্যে জমিতে আমন ধানের শীষ আসতে শুরু করেছে। এরমধ্যে ২ বিঘা জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে, প্রতি রাতে ইঁদুর ধান গাছ কেটে ফেলছে। ইঁদুরের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। জমির যে অবস্থা দেখতে পারছি তাতে মনে হচ্ছে ফলন অনেক কম হবে।
কৃষক মো: এমরান মিয়া বলেন, আমন চারা লাগানোর পর জমি বেশ সবুজ হয়ে উঠে। এখন থোড় আসা জমি ইঁদুর কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন ঔষধ দিয়েছি। খুব একটা কাজ হচ্ছে না। কি করব ভেবে পাচ্ছি না।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, কিছু এলাকায় জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইঁদুর দমনে উপজেলা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে ইঁদুর নিধনে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশীয় পদ্ধতিতে ইঁদুর মারার ফাঁদ, গর্তে পানি ভরে ইঁদুর তাড়ানোসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করি কৃষক ইঁদুর থেকে অনেকটাই রেহাই পাবে। ফসল রক্ষায় ও ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদেরকে সার্বিকভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। আশা করছি এ মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হবে।