বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৮:৫৫ এএম

ক্ষুধার্তকে খাবার দেওয়ার সওয়াব

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৮:৫৫ এএম

ক্ষুধার্তকে খাবার দেওয়ার সওয়াব

ক্ষুধার্তকে খাবার দেওয়া পুণ্যের কাজ-সহানুভূতি ও মানবিকতার পরিচয়। বিবেকবান মানুষমাত্রই এটি উপলব্ধি করেন। তবে ইচ্ছা ও সংকল্পের অভাবে এ আমল অনেক সময় অবহেলিত রয়ে যায়। এটি এমন সওয়াবের কাজ, যার মাধ্যমে আল্লাহর দয়া ও করুণা অর্জিত হয়। আল্লাহ বান্দার জন্য রিজিকের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন।

ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাবার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ ব্যাপারে অত্যধিক গুরুত্ব ও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, মানুষের কল্যাণসংশ্লিষ্ট যত কাজ আছে, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম হচ্ছে দরিদ্র ও ক্ষুধার্তকে খাবার দান করা। (বুখারি, হাদিস : ১২)।

মহান আল্লাহর নির্দেশ পালন

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে মহান আল্লাহ ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাবার দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি তাকে দুটি পথ প্রদর্শন করেছি। অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কী? তা হচ্ছে দাসমুক্তি অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে এতিম আত্মীয় অথবা ধূলি-ধুসরিত মিসকিনকে অন্নদান।’ (সুরা বালাদ, আয়াত : ১০-১৬)’। তাই ক্ষুধার্ত দরিদ্র ব্যক্তিকে খাবার দানের মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর নির্দেশ পালনকারী বান্দা হিসেবে গণ্য হতে পারি।

সর্বোত্তম ও শ্রেষ্ঠ আমল

ইবাদত দুই ভাগে বিভক্ত। এক. মহান আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত ইবাদত। যেমনÑ নামাজ, রোজা, জাকাত ও হজ ইত্যাদি। দুই. বান্দার সঙ্গে সম্পৃক্ত ইবাদত। যেমনÑ মানুষের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করা, বিপদে এগিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাবার দেওয়া। ক্ষুধার্তকে আহার করিয়ে পরিতৃপ্ত করা মহান আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় আমল। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করেন, ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ? মহানবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো।’ (বুখারি, হাদিস : ১২; মুসলিম হাদিস : ৩৯)।

আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ

ক্ষুধার্ত ব্যক্তিদের খাবার দানকারী ব্যক্তি মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভে ধন্য হবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা বলে, কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে আমরা তোমাদের খাবার দান করি, তোমাদের নিকট এর কোনো প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও কামনা করি না।’ (সুরা দাহর, আয়াত : ৯)।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘দয়াশীলদের ওপর দয়াময় আল্লাহ দয়া করে থাকেন। তোমরা জমিনবাসীদের ওপর দয়া করো, আসমানবাসী (আল্লাহ) তোমাদের ওপর দয়া করবেন।’। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯২৪; আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪১)।

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি অনুগ্রহ করে না, তার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ বর্ষিত হয় না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৩৭৬; মুসলিম, হাদিস : ২৩১৯)।

রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকবে, আল্লাহ তার সাহায্যে থাকবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তাকে কেয়ামতের দিনে একটি বড় বিপদ দূর করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৪২; মুসলিম, হাদিস : ২৫৮০)।

ক্ষুধার্তকে খাবার দান করার মাধ্যমে মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়। এতে আমরা মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করতে পারি। আবার তাদের কষ্ট লাঘবের কারণে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন বিভিন্ন কষ্ট লাঘব করে দেবেন।

আল্লাহর শুকরিয়া আদায়

ক্ষুধার্তকে খাবার দেওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি কি দিইনি তাকে দুটি চোখ? এবং জিহ্বা ও দুটি ঠোঁট? আর আমি তাকে দেখিয়েছি দুটি পথ। কিন্তু সে তো ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। তুমি কি জানো ঘাঁটি কী? তা হলো দাসমুক্তি। অথবা ক্ষুধার দিনে এতিম নিকটাত্মীয়কে অথবা ভূলুণ্ঠিত অভাবগ্রস্তকে খাবার দেওয়া।’ (সুরা বালাদ, আয়াত : ৮-১৬)।

শোকরিয়া আদায় করলে সম্মান-মর্যাদা ও সম্পদ বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বেশি বেশি করে দেব।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ০৭)।
রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য

গরিব, অসহায় ও ক্ষুধার্তকে খাবারদানকারী রাসুল (সা.)-এর অনুগত্যকারী বলে গণ্য হবেন। রাসুল (সা.) ক্ষুধার্তকে খাবার দান করতে কঠোর নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা ভিক্ষুক (ক্ষুধার্তকে) কিছু না কিছু দাও, আগুনে পোড়া একটা খুর হলেও।’ (আহমাদ, হাদিস : ১৬৬৯৯; নাসাঈ, হাদিস : ২৫৬৫)।

তিনি আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সে ব্যক্তি পূর্ণ মুমিন নয়, যে নিজে পেট পুরে আহার করে। কিন্তু তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে।’ (বায়হাকি, হাদিস : ৩৩৮৯)। তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষুধার্তকে খাবার দান করো। তাহলে শান্তির সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৪)।

বিশেষ সাহায্য লাভ

ক্ষুধার্তকে খাবার দান করে আল্লাহর বিশেষ সাহায্য লাভ করা যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো গরিবের চলার পথ সহজ করে দেয়, দুনিয়া-আখিরাতে মহান আল্লাহ তার চলার পথ সহজ করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৫৯৪; তিরমিজি, হাদিস : ১৭০২)।
অবিরাম নামাজ-রোজা পালনকারীর মতো

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, মিসকিনদের জন্য চেষ্টা-সাধনাকারীদের সম্বন্ধে এ কথাও বলেছেন যে, ওই ব্যক্তি একাধারে নামাজ ও রোজা পালনকারীর মতো।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০০৭; মুসলিম, হাদিস : ২৯৮২)।

জান্নাতের অফুরন্ত নেয়ামত লাভ

মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুমিনরা আল্লাহর প্রতি তাদের ভালোবাসার খাতিরে ক্ষুধার্ত এতিম, মিসকিন ও কয়েকদিনের খাবার দান করে। যার কারণে মহান আল্লাহ তাদের কিয়ামতের সেই ভয়াবহ দিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। শুধু তাই নয়; বরং তাদের দান করবেন আনন্দ ও সজীবতা। তাদের ধৈর্যশীলতার জন্য দেবেন জান্নাতের রেশমি পোশাক। জান্নাতে তারা উচ্চ আসনে হেলান দিয়ে বসবে।’ (সুরা দাহার, আয়াত : ৮-২২)।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!