নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মসজিদে ফজরের নামাজের সময় নারকীয় হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তার বরাতে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আমিনু ইব্রাহিম জানান, মঙ্গলবার ভোরে ফজরের নামাজের সময় বন্দুকধারীরা কাতসিনা অঙ্গরাজ্যের উঙ্গুয়ান মানতাউ শহরের মসজিদে হামলা চালায়। তিনি বলেন, ‘বন্দুকধারীরা ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করে এবং আরও ২০ জনকে পুড়িয়ে মারে।’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি। নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলে ভূমি ও পানির সীমিত প্রবেশাধিকার নিয়ে কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে প্রায়ই এমন সংঘাত ঘটে। গত মাসে উত্তর-মধ্যাঞ্চলে এক হামলায় ১৫০ জন নিহত হয়েছিল।
কর্তৃপক্ষ বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংঘাত আরও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে এবং আরও বেশি পশুপালক অস্ত্র হাতে নিচ্ছে।
কাতসিনা অঙ্গরাজ্যের কমিশনার নাসির মু’আযু জানান, ওই এলাকায় সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্ষাকালে বন্দুকধারীরা ফসলের জমিতে লুকিয়ে গ্রামে হামলা চালায়। তিনি ধারণা করছেন, সপ্তাহান্তে উঙ্গুয়ান মানতাউ-এর স্থানীয়রা কয়েকজন বন্দুকধারীকে হত্যা করায় প্রতিশোধ নিতে এই হামলা চালানো হয়েছে।
নাইজেরিয়ার খনিজ সম্পদ-সমৃদ্ধ অঞ্চলে নিরাপত্তার সীমিত উপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বহু সশস্ত্র গোষ্ঠী গ্রাম ও মহাসড়কে হামলা চালিয়ে থাকে। কৃষকদের অভিযোগ, মূলত ফুলানি জাতিগোষ্ঠীর পশুপালকরা তাদের জমিতে গবাদিপশু চরিয়ে ফসল নষ্ট করে। অন্যদিকে পশুপালকরা দাবি করেন, এই জমিগুলো আইনগতভাবে স্বীকৃত চারণভূমি, যা ১৯৬৫ সালে অনুমোদিত হয়েছিল।
এদিকে কৃষক-পশুপালকদের সংঘাত ছাড়াও নাইজেরিয়া কর্তৃপক্ষ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের সন্ত্রাস দমনেও লড়াই করছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত অন্তত ৩৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন