প্রথমবারের মতো কমেডিয়ান চরিত্রে অভিনয় করলেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। এবার তিনি স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান। মানুষকে হাসিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি অরিজিনাল ‘ডিমলাইট’ ফিল্মে নতুন পেশায় দেখা যাবে তাকে। এটি নির্মাণ করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। ওয়েব ফিল্মটির সহ-প্রযোজনায় আছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছবিয়াল।
গত ২০ নভেম্বর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছিল, ‘মোশাররফ করিম চরকিতে ফিরছেন আরও একটি নতুন রূপে! কিন্তু কী নিয়ে?’ দর্শকদের আগ্রহ মেটাতে ২৩ নভেম্বর আরেকটি পোস্টে জানানো হয়, ‘লাইফটাই একটা জোক, আর সবচেয়ে বড় জোক মিডলাইফ ক্রাইসিস।’ এই দুটি পোস্ট থেকে ’ডিমলাইট’ ফিল্মটি নিয়ে ধারণা করা যায়।
অরিজিনাল ফিল্ম ’ডিমলাইট’-এ কমেডিকে আশ্রয় করে একজন পুরুষ চরিত্রের মিডলাইফ ক্রাইসিসের মতো সমস্যা দেখানোর চেষ্টা আছে বলে জানান নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন। তিনি বলেন, ‘প্রচুর আলো এবং ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছু দেখা যায় না। কিছু দেখতে চাইলে পরিমিত আলো প্রয়োজন। আমাদের জীবনে নানা সমস্যা আছে, সেগুলোর কিছু দেখা যায় আবার কিছু দেখা যায় না। সেই না দেখতে পাওয়া সমস্যাগুলো সহজভাবে দর্শকদের দেখাতে প্রয়োজন ডিমলাইট। আশা করছি, ফিল্মটি দেখলে দর্শকরা ডিমলাইটের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন।’
নির্মাতা জানান, মিডলাইফ ক্রাইসিসটাকেই প্রতীকীরূপে ডিমলাইট ক্রাইসিস হিসেবে বলার চেষ্টা করেছেন তারা। আর এই ক্রাইসিসে ভোগা মানুষটি হলেন স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান মোশাররফ করিম। এর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। ‘ডিমলাইট’-এর গল্প, সংলাপ চিত্রনাট্য করেছেন নাহিদ হাসনাত।
সম্পর্কের নানা দিকের গল্প বলার প্রয়াস মিনিস্ট্রি অফ লাভ প্রজেক্টটির যাত্রা। স্বাভাবিকভাবে ‘ডিমলাইট’-এর সম্পর্কের গল্প বলা হয়েছে। যেটি প্রধানত এগিয়ে নিয়ে গেছেন মোশাররফ করিম। আর সেই পথে তিনি পেয়েছেন তানজিকা আমিন, পারসা ইভানার মতো অভিনয়শিল্পীদের। গল্পটি শুনে কেমন লেগেছিল তানজিকা আমিনের? উত্তরে বলেন, ‘আমার মনে হয়েছিল এই গল্পটা এ সময়ের এবং এখনই বলা উচিত। এমন ঘটনা আমার যেমন দেখা-জানা, দর্শকদেরও চেনা, জীবনেরই গল্প। তাই কাজটি করতেও আগ্রহী হয়েছি।’
পারশা ইভানা বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে খুব ফ্রেশ একটা গল্প। যেখানে কনফিউশন, হিউমার, ক্রাইসিস আছে এবং রিলেটেবল। আমরা যে লাইফটা লিড করি সেটারই গল্প বলতে পারেন, সাধারণ ও সহজ।’ এই ফিল্মের মাধ্যমে প্রথমবার এ অভিনেত্রীর কাজ আসছে চরকিতে।
গল্পটিকে মোশাররফ করিম দেখছেন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে। তার মতে, জীবনে নানা কিছুর আবরণ পড়ে। নিত্য নৈমিত্তিক আবরণ থেকে শুরু করে চিনি, টুথপেস্ট, বাচ্চার স্কুলের বেতনের আবরণ। সেই আবরণে ঢাকা পরে সম্পর্ক। সেখানে থাকে না ফুল বা ফুলের ঘ্রাণ।
মোশাররফ করিম বলেন, ‘এসব আবরণ ধীরে ধীরে ভালোবাসাকে ঢেকে ফেলে, প্রেমটাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার কিছুর ধাক্কার প্রয়োজন হয় এবং বোঝা যায় যে প্রাণভোমরাটা কোথায়। জীবনের মোরাল জিনিসটা খুব শান্ত, ঠান্ডা মেজাজি।’
‘ডিমলাইট’-এর সহ-প্রযোজক ছবিয়ালের কর্ণধার নুসরাত ইমরোজ তিশা বলেন, ‘দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কারণে আমরা সময় নিয়েছি। কথায় আছে, অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়। মিনিস্ট্রি অফ লাভ-এর আগের ৫টি ফিল্ম দর্শকরা খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। আমার বিশ্বাস ডিমলাইটও দর্শকদের ভালো লাগবে। আগামীতেও ভিন্ন রকমের কাজ যেন দর্শকদের দিতে পারি, সেগুলো নিয়েও কাজ চলছে।’
মিনিস্ট্রি অফ লাভ-এর পঞ্চম সিনেমা মুক্তির ১ বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে ষষ্ঠ সিনেমা। এর আগে ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’, ‘লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ মনোগামী’, ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’, ‘ফরগেট মি নট’ এবং ‘৩৬-২৪-৩৬’ মুক্তি পেয়েছে। সবগুলো ফিল্মই দর্শকরা ভিন্ন ভিন্ন কারণে প্রশংসা করেছেন। এবার ‘ডিমলাইট’-এর পালা।

