ভারতের ত্রিপুরায় টানা ভারি বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এতে নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার একাধিক এলাকার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যদিও ফেনীতে বৃষ্টিপাত তেমন হয়নি, তবে উজানের ঢলে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৮ জুলাই থেকে পরশুরাম ও ফুলগাজীতে তিনটি নদীর বাঁধের ৪১টি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এরমধ্যে ৬টি স্থানে কাজ শেষ হলেও ২৮টিতে এখনো মেরামত কাজ চলমান রয়েছে। গত রোববার রাত থেকে ভারতের ত্রিপুরায় আবারও ভারি বৃষ্টি শুরু হলে সোমবার সকাল থেকে পানি প্রবেশ করতে থাকে লোকালয়ে।
পরশুরামের পশ্চিম অলকা, পূর্ব অলকা, নোয়াপুর ও চিথলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এবং ফুলগাজীর কিছু অংশ ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, গেল বছরের ভয়াবহ বন্যার সময়ও মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধে ১০৪টি ভাঙন হয়েছিল। পরে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামত করা হলেও বছর না যেতেই সেসব বাঁধ আবারও ভেঙেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই প্রতিবছর একই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
পশ্চিম অলকার বাসিন্দা সফিকুর রহমান বলেন, ‘এখানে বৃষ্টি না হলেও ভারতের কারণে আবারও পানিতে ডুবছি। দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই।’
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে মাত্র ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ভারতের ত্রিপুরায় টানা ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘মুহুরী নদীর পানি বিকেল ৬টার দিকে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পূর্বের ভাঙন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, নদীর ছোট বাঁধগুলো মেরামত করা গেলেও বড় বাঁধগুলো এখনো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। পানি বাড়তে থাকায় পূর্বের ভাঙন স্থানগুলো থেকেই বিপদ বাড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বছর বছর কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামতের পরও বাঁধ টেকে না। বাঁধ নয়, এবার তারা চায় টেকসই সমাধান, যাতে প্রতিবছর বন্যা আতঙ্কে না থাকতে হয়।
আপনার মতামত লিখুন :