রূপগঞ্জে অবসরপ্রাপ্ত মেজরের বিরুদ্ধে পিস্তল উঁচিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিজের নামে বৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত মেজর হারুন অর-রশিদের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ ২২ জুলাই সকালে বাড়িয়া ছনি গ্রামের একটি মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিত-ার জেরে পিস্তল হাতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে হাফেজ মিজানুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী আহত হন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা নিজেকে প্রশাসনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এলাকার মানুষকে হয়রানি করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে জমি দখল, প্রাণনাশের হুমকি ও প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শনের একাধিক অভিযোগ থাকলেও ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না।
বাবুস সালাম মাদ্রাসা ও এতিমখানার অধ্যক্ষ মাওলানা ফাইজ উল্লাহ জানান, ওই দিন ফজরের নামাজের পর সামনের কাতারে বসা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিত-া হয় হারুন অর-রশিদের। একপর্যায়ে তিনি কোমর থেকে পিস্তল বের করে শিক্ষার্থীদের দিকে তেড়ে যান এবং হাফেজ মিজানুর রহমানকে আঘাত করেন। মুসল্লিরা তাকে আটক করে রূপগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ পিস্তলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় মুসল্লি সিরাজ মিয়া বলেন, ‘ওই ব্যক্তি এলাকাবাসীকে নিয়মিত ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। আজ প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রকে আঘাত করেছে। এর আগেও জমি দখল করতে গিয়ে অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখিয়েছে।’
জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জের টেকনোয়াদ্দা এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধে হারুন অর-রশিদ তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল উঁচিয়ে রাসেল আহম্মেদ নামের একজনকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
অভিযোগের বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর হারুন অর-রশিদ বলেন, ‘আমি হাম্বলি মতে নামাজ পড়ি, তারা হানাফি। এ নিয়ে মাঝে মাঝেই বিতর্ক হয়। আজ সকালে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে আমাকে অপমান করেছে। আমি আত্মরক্ষার্থে পিস্তল নিয়ে যাই, কাউকে মারিনি। পরে পুলিশ পিস্তলটি নিয়ে গেছে, লাইসেন্স দেখিয়ে ফেরত আনব।’
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীর ওপর হামলার বিষয়ে মৌখিকভাবে জেনেছি। বৈধ একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা জানিয়েছে এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।’
স্থানীয়রা বলছেন, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা হওয়ায় হারুন অর-রশিদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
আপনার মতামত লিখুন :