বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কে এম নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ ছাড়া বিল অনুমোদন না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে চারটি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ঘেরাও করেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে আগেভাগেই বান্দরবান সদর চলে যান পিআইও নজরুল ইসলাম।
জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় কিস্তির অধীনে বিভিন্ন প্রকল্প এরই মধ্যেই বাস্তবায়ন করা হলেও ঘুষ নির্ধারণ না হওয়ায় বিল অনুমোদন স্থগিত রেখেছেন পিআইও। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর একাধিকবার বিল ছাড়ের অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি বারবার আশ্বাস দিলেও কোনো বিল ছাড়েননি। বরং ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ঘুষ দাবি করছেন।’
ইউপি সদস্য রেহেনা বেগম বলেন, ‘প্রত্যেক প্রকল্পে পিআইও নিজে গিয়ে কাজ তদারকি করেছেন। অথচ বিল দেওয়ার সময় গড়িমসি করছেন। অর্ধেক টাকা যদি তাকেই দিতে হয়, তাহলে আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করব কীভাবে?’
আরেক সদস্য মনু ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘শুধু বিল আটকে রাখাই নয়, কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্পের টাকা ইউপি সদস্যদের না দিয়ে নিজেই তুলে ব্যক্তিগতভাবে রেখেছেন বলে অভিযোগ আছে।’
জনপ্রতিনিধিরা জানান, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলীকদম উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে তারা বাধ্য হয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ঘেরাও করেন।
তবে এ বিষয়ে পিআইও নজরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দ্রুত সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দিয়েছি। নির্দেশনা অমান্য করলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জনপ্রতিনিধিরা আশা করছেন, দুর্নীতির এই অভিযোগ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন।
