লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বলিরপোল-নাছিরগঞ্জ সড়কটি অতিবৃষ্টি ও মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির চাপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গভীর খালে পরিণত হয়েছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় ২০ হাজার মানুষ। পাশের খেতের কোমর পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
এ ছাড়া একই কারণে উপজেলার চরমার্টিন ও চরকালকিনিসহ বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা সড়কগুলো ক্ষতবিক্ষত হয়ে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। সরেজমিন উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরমার্টিন গ্রামে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, নাছিরগঞ্জ-বলিরপোল সড়কের আশপাশে অন্তত ২০ হাজার মানুষ বসবাস করে। সড়কটি ঘেঁষেই পূর্বপাশে সরু খাল রয়েছে। এতে অতিজোয়ারের সময় প্রত্যেকবারেই সড়কটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫ হাজার মানুষের যাতায়াত রয়েছে। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানির চাপে সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি এখন প্রায় ৩০ ফুট প্রস্থ খালের আকার ধারণ করেছে। এ কারণে সড়কটিতে চলাচলকারী মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
সড়কের পশ্চিম পাশের কোমর পানি মাড়িয়ে কষ্ট করে সবাইকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্কুল শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়-বাড়ি যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েছে। আশপাশের কাঁচা সড়কগুলোও নষ্ট, এতে সেসব রাস্তাগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী। কেউ একজন অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত সময়ে হাসপাতালে নেওয়ার সুযোগ নেই। জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে সড়কটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায়।
মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান বলেন, তীব্র জোয়ারের চাপে গত রোববার ভোরে সড়কটি ভেঙে যায়। পরে ১ ঘণ্টার মধ্যেই ভাঙনটি খালে পরিণত হয়েছে। আমাদের মসজিদের রাস্তাটিও ভেঙে গেছে। এখন আমরা মসজিদেও যেতে পারছি না। কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি ঠিক করে দিলে অথবা একটা কালভার্ট করে দিলে আমরা চলাচল করতে পারব।
গ্রাম্য চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সড়কটি ভাঙার কারণে এ অঞ্চলের জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। একজন রোগী খুবই অসুস্থ, সে আমার ফার্মেসিতে যাবে, কিন্তু যেতে পারেনি। এখন আমাকেই আসতে হয়েছে। কোনো প্রসূতিকে জরুরি হাসপাতালে নেওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার করলে জনগণের দুর্ভোগ কমবে, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়ে যেতে পারবে।
শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ বলেন, বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় ভাঙনটি বড় ছিল না। ছুটি শেষে এসে দেখি ভাঙনটি খালে পরিণত হয়েছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, সড়ক বিচ্ছিন্নের ঘটনাটি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসককে সরেজমিনে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে আমাকে বিষয়টি জানানোর জন্য বলা হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ার হওয়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। সড়কটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা চেষ্টা করব এখানে একটি কালভার্ট নির্মাণ করার, যেন পানি যাওয়ার একটি ব্যবস্থা হয়। সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আমরা অবহিত করব।
আপনার মতামত লিখুন :