ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

সড়কের কাদা-গর্তে চরম দুর্ভোগ

আবু বকর সিদ্দিক বাবু, উল্লাপাড়া
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ১১:৫০ পিএম

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতবাড়ী-শাহজাহানপুর কাঁচা সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চরম অবহেলার শিকার। প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেই গর্তগুলো কাদাপানিতে পূর্ণ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগে পড়ে ইউনিয়নের অন্তত আট গ্রামের সাধারণ মানুষ।


সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন বেতবাড়ী, পূর্ব সাতবাড়িয়া, বন্যাকান্দি, রামকান্তপুর, বেতকান্দি, ছোট লক্ষ্মীপুর, বড় লক্ষ্মীপুরসহ আশপাশের আট গ্রামের হাজারো মানুষ হাটে-বাজারে, স্কুল-কলেজে এবং জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু রাস্তার করুণদশার কারণে শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী ও রোগীদের চলাফেরা একপ্রকার দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।


এলাকাবাসী দ্রুত এই কাঁচা রাস্তা পুরোপুরি পাকা করার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এটি শুধু একটি রাস্তা নয়, বরং আটটি গ্রামের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সরাসরি জড়িত একটি পথ। অবিলম্বে রাস্তাটি পাকা না হলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। 


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে এলজিইডির উল্লাপাড়া অফিস থেকে রাস্তার বন্যাকান্দি মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশ পাকা করা হয়। কিন্তু চলতি বছর ভারি বর্ষণে সেই পাকা অংশও ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। আর বাকি তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার অবস্থা এখন আরও ভয়াবহ। মাঝে মাঝে হালকা যানবাহন চলতে গিয়ে গর্তে পড়ে যায় এবং যাত্রীদের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। চালকদের রাস্তার পাশের লোকজন ডেকে গাড়ি ওঠাতে হয়। কৃষিসহ অন্য মালামাল পরিবহনে সব থেকে বেশি কষ্ট হয়।


স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন ও সাইফুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়। বৃষ্টির দিনে তো বের হওয়াই যায় না। কাদাপানি আর গর্তের কারণে এই পথে চলাচল করা যায় না। এরই মধ্যে সড়কে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। 


তারা আরও বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের বিষয়ে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের কাছে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিগত ১৫ বছরে মাত্র দু-একবার সামান্য মাটির কাজ করা হয়েছিল, যা কয়েক মাসের মধ্যেই বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়।


পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মো. আব্দুস ছালাম বলেন, চলতি মৌসুমে ভারী বর্ষণের ফলে এই রাস্তা খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এই পথ দিয়েই স্থানীয়রা প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকেন। বহুবার চেষ্টা করেছি কাজ শুরু করতে, কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় কিছু করা সম্ভব হয়নি। এলজিইডি অফিসে একাধিকবার জানানো হয়েছে, কিন্তু অফিস কর্তৃপক্ষ এখনো কাজ শুরু করেনি।


এলজিইডি উল্লাপাড়া কার্যালয়ের উপজেলা প্রকৌশলী মো. শহিদুল্লাহ বলেন, রাস্তার দুরবস্থার কথা আমরা জানতে পেরেছি। কিছু অংশ ইতিমধ্যে পাকা করা হয়েছে। বাকি অংশের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।