বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে লাকি সিং (২৪) নামে এক নারীর পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের নিকুছড়ি সীমান্তে ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি অবস্থানে প্রায় ৪০০ মিটার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঘটনাস্থলটি বর্তমানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে থাকা অংজান ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা। ধারণা করা হচ্ছে, ওই এলাকায় পূর্বে আরাকান আর্মির সদস্যদের পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত নারী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের গাছবুনিয়া গ্রামের সুমং কারবারির মেয়ে। তিনি বাঁশ কোরল কুড়াতে সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। তখনই দুর্ঘটনার শিকার হন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে দ্রুত কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে লাকি সিংকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তের কিছু অংশে বসবাসকারীরা জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রায়শই মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গিয়ে বাঁশ ও কাঠ সংগ্রহ করেন। তবে গত দেড় বছরে এ ধরনের প্রবেশে অন্তত ২৭ জন মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। সীমান্তজুড়ে মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাত, আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ এবং স্থাপন করা মাইন ফাঁদের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনজীবন ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার এবং অনুপ্রবেশ বন্ধে কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।