ঢাকা বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫

অফিসকক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি

প্রধান শিক্ষিকা সাময়িক বরখাস্ত

স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ১০:৪২ এএম

পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ১৬৬নং সোনারঘোপ রমেশ চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সাঁটানোর ঘটনায় প্রধান শিক্ষিকা শামিমা ইয়াছমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।


গত সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে উপজেলা শিক্ষা অফিস এ সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে তদন্ত টিম বিদ্যালয়ে গিয়ে ছবিটি সাঁটানোর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্য বলে নিশ্চিত হয়।


গত রোববার স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দেখে আপত্তি জানান এবং ছবিটি নামাতে বলেন। প্রধান শিক্ষিকা রাজি না হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ছবিটি নামানোর নির্দেশ দেওয়া হলে প্রধান শিক্ষিকা ছবিটি খুলে বিদ্যালয়ের চিলেকোঠায় রেখে দেন। 
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামিমা ইয়াছমিন বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ে ২০২০ সালে জয়েন করি। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিটি তার আগে থেকেই এখানে সাঁটানো ছিল। রোববার এলাকার একটি মহল বিদ্যালয়ে এসে আমাকে ছবিটি নামাতে বললে আমি তাদের জানাই ‘আমার বাবা মঈনউদ্দীন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শিক্ষক ছিলেন। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করি। সেই চেতনার দিক দিয়ে আমরা শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান করি। বিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানোর জন্য আমার কাছে সরকারি কোনো নির্দেশনা আসেনি। সরকারি নির্দেশনা ছাড়া আমি ছবি নামাতে পারব না। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নির্দেশ দিলে আমি ছবি নামিয়ে ফেলব। পরে বিকেলে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দিন ফোন দিয়ে আমাকে ছবিটি নামাতে বললে আমি ছবিটি নামিয়ে ফেলি।


উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দীন জানান, জনশৃঙ্খলা রক্ষায় কিছু বিদ্যালয় থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি সরানো হয়েছে, তবে এ বিষয়ে সরকারি কোনো লিখিত নির্দেশনা নেই।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, ‘তদন্তে ছবিটি সাঁটানো থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।’


বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ এটিকে স্বাধীন মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ মনে করছেন সিদ্ধান্তটি সঠিক।