পূর্ব আফ্রিকার দেশ গিনি বিসাউয়ের ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনীর একটি দল। ক্ষমতা দখলের পর প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালোকে গ্রেপ্তার করেন তারা। সম্প্রতি দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। এতে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি নিজেদের জয়ী ঘোষণা করেছিল।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের একটি দল ঘোষণা দেয় দেশের ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ তাদের হাতে রয়েছে। তারা টেলিভিশনে এক লিখিত বিবৃতিতে নিজেদের ‘উচ্চ সামরিক কমান্ড’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। তারা বলেছেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ করবেন তারা।
এই সামরিক কর্মকর্তারা দেশে ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ সব ধরনের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড বাতিল ঘোষণা করেছে। এছাড়া আকাশ, নৌ ও স্থলসহ সব সীমান্ত বন্ধ ও রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্যালেস, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তরের কাছে প্রথমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এরপরই সেনা কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দখলের ঘোষণা আসে।
গত রোববার গিনি-বিসাউয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালো এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াসের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। তারা দুজনই নিজেদের বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) এ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু এর আগে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।
প্রেসিডেন্ট উমারো টেলিফোনে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। বর্তমানে সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ হেড কোয়ার্টারে আছি।’ প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা ডমিঙ্গোস সিমোয়েস পিরেইরাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বর্তমানে সেখানে কারফিউ জারি হয়েছে।
এই সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান ডেনিস এন’কানহা। প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তার দেওয়ার দায়িত্বে থাকা এই সেনা কর্মকর্তাই এখন প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করেছেন।
১৯৭৪ সালে পর্তুগাল থেকে স্বাধীনতা লাভ করে গিনি-বিসাউ। এরপর থেকে দেশটিকে একাধিকবার অভ্যুত্থান এবং অভ্যুত্থান চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।বিতর্কিত এ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলকে নির্বাচন করতে দেওয়া হয়নি।

