সামরিক শাসনবিরোধী ৩ হাজারের বেশি রাজবন্দিকে সাধারণ ক্ষমা করেছে মিয়ানমার। একইসঙ্গে নির্বাচনের আগে সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি সাধারণ বন্দির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে জান্তা সরকার। ২০২১ সালে অং সান সু চিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এরপর অনেক প্রতিরোধ হয় দেশটিতে, ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ।
তবে জান্তা সরকারের সাধারণ ঘোষণায় মিয়ানমারের সাবেক নেত্রী অং সান সু চি থাকবেন কি না- তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে কার্যত অজ্ঞাত জায়গায় বন্দি রয়েছেন সু চি।
এমআরটিভি জানিয়েছে, মিয়ানমারের নির্বাচন পরিচালনা করা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তি কমিশন রাজবন্দিদের সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করেছে। ৩ হাজার ৮৫ জন বন্দি দণ্ডবিধির ৫০৫ (এ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তাদের মুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়।
তাদের অপরাধ ছিল বক্তব্য দিয়ে জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতা বা ভয় তৈরি করা। জান্তাবিরোধী মন্তব্য করা বা ভুয়া সংবাদ ছড়ানোর ফলে অপরাধ করেছেন তারা। উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে এসব রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। মিয়ানমারে উসকানিমূলক এমন অপরাধে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এসব বন্দিরা কখন মুক্তি পাবেন, তা বলা হয়নি। তবে অতীতের সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পেতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগেছে।
ঘোষণা অনুসারে, ইতোমধ্যে ৭২৪ জন বন্দিকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পরে কোনো অপরাধ করলে এসব বন্দিরা আগের সাজাসহ নতুন সাজাও ভোগ করবেন।
পৃথক আরেকটি ঘোষণায় ৫ হাজার ৫৮০ জন বন্দির মুক্তির কথা জানানো হয়। তারা একই অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এমন অভিযোগে বিচারের পর আত্মগোপনে আছেন, তারাও সাধারণ ক্ষমা পাবেন এবং তাদের মামলা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিশিষ্টজনরা বলছেন, এবারের নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হবে না। কারণ, মিয়ানমারে মুক্ত কোনো গণমাধ্যম নেই। জান্তা সরকার সু চির বিলুপ্ত ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টির বেশির ভাগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার হিসাব রাখে- এমন একটি স্বাধীন সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত সু চিসহ মিয়ানমারে ২২ হাজার ৭০৮ জন রাজনৈতিক বন্দি আটক ছিলেন।
রাজনৈতিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ৮০ বছর বয়সি সু চি ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।



