যেখানে ছিল স্থায়ী বাঁধের আশ্বাস, এখন সেখানে আতঙ্ক। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতী নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধের সদ্য নির্মিত অংশ ধসে পড়ায় নদীতীরবর্তী শতাধিক পরিবার চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। গোপালপুর ও টগরবন্দ ইউনিয়নের সংযোগস্থল চর আজমপুর এলাকায় ৩০ মিটার বাঁধ ধসে পড়ার পর এমন ভয়াবহ বাস্তবতার মুখে পড়েছেন স্থানীয়রা।
চর আজমপুরের বাসিন্দা হান্নান শরীফ বলেন, ‘বাঁধের কাজ দেখে আমরা ভরসা পেয়েছিলাম। এখনো পুরো কাজ শেষ হয়নি, তার আগেই ধসে পড়ল। এই কাজ ভালো হয়নি বলেই এমন হচ্ছে।’
ধসে যাওয়া বাঁধটি এখনো পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। ২০২৩ সালের জুনে একনেক সভায় অনুমোদিত ‘মধুমতী নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ৭.৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ফরিদপুর ও মাগুরা জেলায়।
চর আজমপুর অংশের ৩০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিটন মল্লিক, ব্যয় প্রায় ১২ কোটি টাকা। ধসের খবর পাওয়ার পর গত মঙ্গলবার সকাল থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে।
স্থানীয় শেফালী বেগম জানান, ‘স্থায়ী বাঁধ দেখে ধার করে ঘর তুলেছিলাম, এখন সেটাও ভাঙনের হুমকিতে।’ এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণে তদারকির অভাব ছিল এবং নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার হয়েছে।
পাউবোর ফরিদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন অবশ্য এসব অভিযোগ নাকচ করে দেন। তার ভাষ্য, ‘আমাদের অন্য প্যাকেজগুলোর তুলনায় কাজটি ভালো হয়েছে। ঢালাওভাবে তদারকির অভাব বলাটা সঠিক নয়। ধসের কারণ নদীর স্রোতধারার পরিবর্তন।’
তিনি জানান, প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে এবং ঠিকাদারকে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান জানান, নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। আপাতত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পানি কমলে ব্লক বসিয়ে মেরামতের কাজ শুরু হবে।
আপনার মতামত লিখুন :