ঢাকা রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

ঘেরপাড়ে করলা চাষে স্বাবলম্বী কৃষকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৮:৩৯ এএম

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর, যা এখন পরিচিত ‘সবজি গ্রাম’ নামে। বর্ষায়, শীতে কিংবা গ্রীষ্মে, সারা বছরই এ গ্রামে জমে থাকে শাক-সবজির রঙিন মেলা। গ্রামের চারপাশে যতদূর চোখ যায়, দেখা মেলে মাছের ঘের, আর সেই ঘেরের পাড়জুড়ে ঝুলে থাকে করলার সবুজ মালা।

এক ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপ দিয়েছেন এখানকার কৃষকেরা। ঘেরে মাছ চাষ, বোরো মৌসুমে ধান, আর বর্ষা মৌসুমে ঘেরপাড়ে করলা ও নানা সবজির চাষ, এভাবেই তারা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চাষ করে সারা বছর আয় করছেন।

শুধু রঘুনাথপুর গ্রামেই এ বছর সাত হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আর পোকামাকড়ের আক্রমণ না হওয়ায় এ বছর করলার উৎপাদন হয়েছে রেকর্ড পরিমাণে। প্রতি কেজি করলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে, মৌসুমের শুরুতে দাম ছিল আরও বেশি।

গ্রামের কৃষক সজিব বিশ্বাস ও হরেন বিশ্বাস জানান, স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়েও করলা যাচ্ছে আশপাশের বাজারগুলোয়। ভালো উৎপাদন আর ন্যায্যমূল্যে বিক্রির কারণে কৃষকেরা বেশ খুশি।
এ গ্রামে কৃষিকাজে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সমানভাবে যুক্ত। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবাই ব্যস্ত থাকে খেতে-খামারে। অন্য ফসলের প্রতি তেমন ঝোঁক নেই; শাক-সবজি ফলিয়েই হাজারো কৃষক পরিবার চালাচ্ছেন তাদের জীবিকা।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদার জানান, ‘গোপালগঞ্জ নিম্ন জলাভূমি অঞ্চল হওয়ায় ঘেরপাড়ে করলা ও অন্যান্য সবজি চাষ বেশ জনপ্রিয়। শুধু রঘুনাথপুরেই এ বছর সাত হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছে, যা জেলার অন্যতম বড় উৎপাদন কেন্দ্র।’

অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, সরকারি সঠিক সহযোগিতা ও স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা গেলে এ অঞ্চলের কৃষকেরা আরও বেশি পরিমাণে করলা উৎপাদন করতে পারবে। এতে যেমন কৃষকের আয়ের পথ বাড়বে, তেমনি দেশের সবজি বাজারেও যোগ হবে গোপালগঞ্জের সবুজ অবদান।