ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সম্ভাব্য রুট পরিবর্তনের দাবিতে কেরানীগঞ্জে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে এলকাবাসী। গতকাল রোববার বেলা ১১টায় উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়ন বসতভিটা ও ভূমি রক্ষা কমিটির আয়োজনে রাজেন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কে অবরোধ করে এসব কর্মসূচি করা হয়।
‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সরাও, গ্রাম বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’, এবং ‘জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও বসতভিটা রক্ষা করব’ সেøাগানে বিক্ষোভ মিছিলে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীসহ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী বলেন, ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রস্তাবিত টার্নিং পয়েন্ট স্থাপনের লক্ষ্যে তেঘরিয়া ইউনিয়নের ১৩টি গ্রাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আমাদের পূর্বপুরুষদের বসতভিটা, মসজিদ-মন্দির-উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠসহ সবকিছু হারাতে হবে। সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর প্রিয় প্রাঙ্গণের মতো এত বড় ফাঁকা জায়গা থাকতে কেন আমাদের বসতভিটা উচ্ছেদ করা হবে? এত সহজ সমাধান থাকতে কেন মানুষের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করবেন? ওই দিক দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় কমে যাবে।
তারা বলেন, গত ১৫ বছরে শুধু একটি ইউনিয়ন থেকে (তেঘরিয়া) প্রায় ১ হাজার ২০০ একরের অধিক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, যা চরম অন্যায়। তেঘরিয়া ইউনিয়নে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, প্রিয় প্রাঙ্গণ, ঝিলমিল আবাসিক, সাউথ টাউন, র্যাব-১০, মায়াকানন, আমর্ড পুলিশ প্রতিটি প্রকল্পে আমরা জমি দিয়েছি। আর কত দেবে তেঘরিয়াবাসী?
ঢাকা জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক জুয়েল মোল্লা বলেন, প্রস্তাবিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বর্তমান নকশা বাস্তবায়িত হলে গ্রামটির শত শত বছরের ইতিহাস ও বসবাস যোগ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে। তেঘরিয়া ইউনিয়ন শুধু একটি গ্রাম নয়, এটি একটি ঐতিহ্য। এখানে হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কেউই ঘরবাড়ি নিয়ে টিকে থাকতে পারবে না। তাই সরকারকে বলব মানুষ নয়, রুট পরিবর্তন করুন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা উন্নয়নের বিরুদ্ধে নই, কিন্তু উন্নয়ন হতে হবে মানবিক ও পরিবেশসম্মত। মাত্র ১ কিলোমিটার পূর্বদিকে সরিয়ে নিলেই গ্রাম রক্ষা পায়। সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিপুর প্রিয় প্রাঙ্গণ বাঁচাতেই আমাদের বসতভিটার ওপর দিয়ে রাস্তার পরিকল্পনা করেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। বর্তমান সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, জনগণের কথা শুনুন, বসতভিটা রক্ষা করুন। জনগণের কণ্ঠ শুনুন, ভিটেমাটি রক্ষা করুন।’