ঢাকা রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫

বন বিভাগের জমি দখল বাধা দেওয়ায় চাঁদাবাজির মামলা

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৬:১১ এএম

রংপুরের মিঠাপুকুর থেরেক ফুলবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের তালিমগঞ্জ মোড়ে রাস্তার পাশেই বন বিভাগের ৪৭ শতাংশ জমি রয়েছে। সেই জমিতে বন বিভাগের গাছও আছে। কিন্তু সরকারি ওই জমি ভাঙাড়ির ব্যবসার নামে অবৈধভাবে দখল করছেন ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম। এমনকি বনের গাছ কেটে বাড়ি ও দোকান নির্মাণ করেছেন। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করলেও নীরব ভূমিকা পালন করছেন উপজেলা বন বিভাগ ও ভূমিসংশ্লিষ্টরা।

অভিযোগ রয়েছে, ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার কারণে সরকারি জমি দখল হলেও নীরব ভূমিকা পালন করছন উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।

সরেজমিন জানা গেছে, উপজেলার চেংমারী ইউনিয়নের তালিমগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে বন বিভাগের ৪৭ শতাংশ জমিতে বনায়ন কর্মসূচির আওতায় বৃক্ষরোপণ করেছে বন বিভাগ। গাছগুলোও বেশ বড় হয়েছে। তবে বনের গাছ কেটে সেখানে বাড়ি ও ভাঙাড়ির ব্যবসা খুলে জমি দখল করেছেন অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম। সম্প্রতি সরকারি জায়গায় ইট দিয়ে পাকা ঘর নির্মাণ করতে গেলে বাধা দেন স্থানীয় তিলকপাড়া গ্রামের আফছার আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম (৪৫)। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিত-া হয়। একপর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পাকা ঘর নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বাধ্য হন নজরুল ও তার লোকেরা। এদিকে মূল ঘটনা ধামাচাপা দিতে এবং সরকারি জমি অবৈধ দখলে রাখতে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম।

ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইসলাম যে জায়গায় ভাঙাড়ি ব্যবসা করছেন সেই জায়গাটির মালিক আমরা। আমাদের দলিলপত্রসহ বৈধ কাগজপত্র আছে। ’৪০ এবং ’৬২ সালের রেকর্ড-মূলে বৈধ মালিকের কাছ থেকে আমরা জমিটি ক্রয় করেছি। কিন্তু সর্বশেষ ’৯২ সালে বন বিভাগের নামে রেকর্ড হয়। এ নিয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি, রায় আমাদের পক্ষে হলে জমি দখলে নেব। মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত ওই জমিতে বন বিভাগ ছাড়া আর কারো স্থাপনা থাকা আইনগত অপরাধ।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন নজরুল ওই জমিতে পাকা ঘর নির্মাণ করলে আমি বাধা দিই। এ কারণে চাঁদাবাজির অভিযোগে আমার নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, যেখানে ব্যবসা করছি জায়গাটা বন বিভাগের। কিন্তু আমি সরকারি জায়গায় ব্যবসা করছি। আমার কাছে নুরুল ইসলাম প্রায় সময় চাঁদা এবং জমি ওদের দাবি করে। সর্বশেষ ১ লাখ টাকা চাঁদা চায়। এ কারণে আমি তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

মিঠাপুকুর উপজেলার আওতাধীন হেলেঞ্চা বন বিট কর্মকর্তা জে এসান ইসলাম বলেন, অবৈধ দখলদার নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বন বিভাগের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। পাকা ঘর নির্মাণ বা অন্য কোনো স্থাপনা তৈরি না করার জন্য তাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ইউএনও এবং এসিল্যান্ড স্যারকে অবগত করা আছে। খুব শীঘ্রই সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।