রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২০ বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন পরিণত হয়েছে এক আতঙ্কের স্থানে। উপজেলা শিক্ষা কমিটি প্রায় তিন বছর আগে বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও এখনো নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিদিন ভাঙাচোরা ভবনের নিচে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পড়াশোনা করছে ৩০৯ শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে নিয়মিত খসে পড়ছে পলেস্তারা, বর্ষা মৌসুমে শ্রেণিকক্ষে পানি চুইয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের বই খাতা ভিজে যাচ্ছে। কখনো পলেস্তারা গিয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের গায়েও। তারপরও বিকল্প না থাকায় শিক্ষকরা বাধ্য হচ্ছেন পাঠদান চালিয়ে যেতে। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রাফি আতঙ্কের কথা জানিয়ে বলে, ‘ক্লাস করতে বসলে ভয় লাগে। মনে হয়, ছাদটা এখনই মাথার ওপর ভেঙে পড়বে। আমরা চাই নিরাপদ একটি নতুন ভবন, একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ক্লাসের অন্য সহপাঠীরা।’
অভিভাবকরা প্রতিদিন সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়েও নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন না। অভিভাবক জীবন বলেন, ‘কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে আমাদের সন্তানদের প্রাণ যেতে পারে। তাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ ছাড়া উপায় নেই।’ আরেক অভিভাবক বলেন, ‘পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান একেবারেই অমানবিক। সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো স্থায়ী কোনো সমাধান আসেনি। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার জন্যই বিপজ্জনক পরিবেশে পাঠদান চালাতে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা আমাদের নজরে আছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ এটি সত্যি। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
দীর্ঘ ১২০ বছরের ঐতিহ্যের এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এখন একটাই দাবি ‘ভাঙা ভবন নয়, নিরাপদে পড়াশোনা করার মতো নতুন একটি স্কুল ভবন।’