ঢাকা রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

চুয়েটে সার্কিট অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
প্রতিযোগিতায় অংশ নিছেন শিক্ষার্থীরা।

বিভিন্ন সমীকরণের মারপ্যাঁচের মাধ্যমে একটি তড়িৎ বর্তনী সমাধান করা যায়। সমাধানের এই জ্ঞানকে কেন্দ্র করেই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) আয়োজিত হয়েছে “সার্কিট সলভিং অলিম্পিয়াড ২০২৫”। চুয়েটের মহাকাশ ও রোবটিক্ প্রযুক্তি বিষয়ক ক্লাব এন্ড্রোমিডা স্পেস অ্যান্ড রোবটিক রিসার্চ অর্গানাইজেশন (এ্যাসরো) এর উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে এই প্রতিযোগিতার।

শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইএমই ভবনের তৃতীয় তলায় শুরু হয় এই প্রতিযোগিতাটি।

প্রতিযোগিতায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ১০০ এর অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মোট ১০০ নম্বরের এই প্রতিযোগিতায় সহজ থেকে কঠিন মোট চারটি স্তরে ছিল ১২ টি প্রশ্ন, যেখানে সমাধানের জন্য সময় দেওয়া হয় ২ ঘণ্টা।

অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত বণিক বলেন, ‘সার্কিট অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সার্কিট বিশ্লেষণে দক্ষ হয়ে ওঠা। এখানে আমরা সার্কিটের মৌলিক ধারণাগুলো ব্যবহার করে সমস্যা সমাধান করার অভিজ্ঞতা অর্জন করি। এই অলিম্পিয়াডে কার্শফের , কারেন্ট ডিভিশন, সমতুল রোধ, ওয়াই ডেল্টা কানেকশন ইত্যাদি বিষয়গুলো দ্রুততার সাথে সমাধান করা ও জটিল সার্কিটকে সহজভাবে বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক সমাধান বের করার কৌশল শিখতে পেরেছি।’

তিনি বলেন,‘এখানে মূলত যেসব সমস্যার সমাধান করতে হয়েছে তা হলো- রেজিস্টিভ নেটওয়ার্ক এনালাইসিস, সিরিজ প্যারালাল সিম্পলিকেশন , কার্শফের কারেন্ট ও ভোল্টেজ  ল প্রয়োগ এবং নির্দিষ্ট সার্কিটে কারেন্ট ও  ভোল্টেজ ডিস্ট্রিবিউশন  নির্ণয়। এই প্রতিযোগিতা বইয়ের পাঠকে আরও বাস্তবমুখী করে তুলবে এবং পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাস তৈরি করবে।’

অন্যদিকে, ‘স্কিল ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে এটি দ্রুত গণনা করার অভ্যাস, সমস্যা সমাধানে লজিক্যাল চিন্তা, সময় ব্যবস্থাপনা এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করবে। সার্কিট অলিম্পিয়াড শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয় বরং এটি জ্ঞান প্রয়োগের,নতুন কিছু শেখার এবং দক্ষতা প্রমাণ করার একটি জায়গা।’

আয়োজক কমিটির সদস্য তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অম্লান সরকার বলেন, ‘ইলেক্ট্রিকাল, ইলেক্ট্রনিকস, কমিউনিকেশনসহ আধুনিক প্রযুক্তির প্রায় সবক্ষেত্রেই অগ্রগতির মূলভিত্তি হলো তড়িৎকৌশল, আর তড়িৎকৌশলের মূলভিত্তি হলো সার্কিট। জুনিয়রদের মধ্যে সার্কিট বিষয়ে আগ্রহ জাগিয়ে তোলা এবং সার্কিট থিওরির মৌলিক ধারণার ওপর গুরুত্বারোপ করাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। সামনে আমরা আরো বেশি সার্কিট সলভারের আগমণের প্রত্যাশা রাখি।’

এ্যাসরো এর সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল কারিমুন বলেন, ‘সার্কিট অলিম্পিয়াড হলো এ্যাসরোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ, যা মূলত নতুন ব্যাচকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়। এখানে সিলেবাস থাকে এইচএসসি ভিত্তিক, তবে কিছুটা অগ্রসর স্তরের বিষয়ও যুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে নবীন শিক্ষার্থীরা সার্কিট সংক্রান্ত জ্ঞান, বিশ্লেষণী দক্ষতা ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বিকশিত করার সুযোগ পায়। পাশাপাশি তারা ক্যাম্পাসের ক্লাব সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী যুক্ত হতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, তরুণ প্রজন্মের মেধা ও সৃজনশীলতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে তারা শুধু একাডেমিক ক্ষেত্রেই নয়, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ও গবেষণার জগতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এ্যাসরো সবসময়ই শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে উৎসাহিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’