ঢাকা সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ছয় বছরেও শেষ হয়নি গঙ্গাঋদ্ধি জাদুঘর

নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ০৬:৩৭ এএম
জাদুঘর

নরসিংদীর ঐতিহাসিক ওয়ারী-বটেশ্বর প্রতœস্থানের মূল্যবান নিদর্শন সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য গঙ্গাঋদ্ধি নামে একটি জাদুঘর নির্মাণে ২০১৯ সালে উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে দুই বছরের মধ্যে নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ছয় বছরেও শেষ হয়নি কাজটি। এতে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দর্শনার্থীরা।

২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর জাদুঘরটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। নরসিংদী জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয় তিনতলা বিশিষ্ট এই জাদুঘরটি। নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরসিসিএল-আরআই। ভবনটির মোট আয়তন ১৬ হাজার বর্গফুট। প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় থাকবে প্রদর্শনী গ্যালারি এবং তৃতীয় তলায় গবেষকদের জন্য থাকার কক্ষসহ গবেষণা সুবিধা।

স্থানীয়রা জানান, ওয়ারী-বটেশ্বর প্রতœস্থানের সন্ধান মেলে ১৯৩০ সালের দিকে স্কুলশিক্ষক হানিফ পাঠানের লেখালেখির মাধ্যমে। পরবর্তীতে তার ছেলে হাবিবুল্লাহ পাঠান অনেক প্রতœবস্তু সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করেন তাদের পারিবারিক পাঠাগারে। ২০০০ সালে ‘ঐতিহ্য অন্বেষণ’ নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেখানে প্রতœতাত্ত্বিক খননকাজ শুরু করে। খননে প্রাচীন রৌপ্য মুদ্রা, লৌহ কুঠার, বল্লম, বাটখারা, পোড়ামাটির কিন্নর ও পুঁথিসহ নানা দুর্লভ প্রতœবস্তু উদ্ধার হয়।

বেলাব উপজেলার ওয়ারী ও বটেশ্বরসহ আশপাশের এলাকায় পাওয়া এসব প্রাচীন প্রতœবস্তু সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্যই গঙ্গাঋদ্ধি জাদুঘর নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু বারবার সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো জাদুঘরটি উদ্বোধনের মুখ দেখেনি।

এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী নূর-ই ইলহাম বলেন, ‘গঙ্গাঋদ্ধি জাদুঘরের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। তবে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হলেও এটি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে হওয়ায় ব্যবস্থাপনা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ কারণেই কাজ কিছুটা মন্থর গতিতে চলছে। জটিলতা নিরসনে মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নেওয়া হবে।’

দর্শনার্থী ও স্থানীয়দের দাবি, দেশের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন বহনকারী এই প্রতœস্থানের গুরুত্ব বিবেচনায় দ্রুত জাদুঘরের নির্মাণ শেষ করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হোক। তারা মনে করেন, এটি শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখবে।