নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তত ১৫ জন যাত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ডাকাতরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে এ ঘটনা ঘটে। যাত্রীরা জানান, জিএস পরিবহনের বাস (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৬৮৯৫) কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে গত রাতে ছেড়ে আসে। ভোর সাড়ে ৫টায় ফতুল্লার সাইনবোর্ড এলাকায় পৌঁছালে চালক যাত্রী নামানোর জন্য সাইনবোর্ড মোড়ে গাড়ি না রেখে কিছুটা দূরে মাহমুদপুর এলাকায় জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্টের কাছে থামান।
সেখানে কয়েকজন যাত্রী নামার সময় একদল যুবক নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়িতে উঠে বলেন যাত্রীদের কাছে মাদক আছে তল্লাশি করা হবে। তখন চালক ধীরে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছেন। এর মধ্যে ডিবি পরিচয় দেওয়া যুবকরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গাড়ির যাত্রী আফরোজা আক্তার ও তার বোন মুন্নি আক্তারের পরিহিত স্বর্ণসহ নগদ টাকা, যাত্রী রুবেল হোসেনের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ অন্যান্য যাত্রীর কাছ থেকে টাকা পয়সা লুটে নেয়। এরপর ডাকাত দল জালকুড়ি এলাকায় নেমে গাড়ি ছেড়ে দেয়। ডাকাত দল যাওয়ার পর যাত্রীরা ডাক চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে থানায় খবর দেয়।
যাত্রীরা আরও জানান, বাসচালক ও হেলপারদের আচরণ সন্দেহজনক হলে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে বলতে পারছি না এটি ছিনতাই না ডাকাতি। তবে বাসচালক আরিফুল ইসলাম (৫০) দুই হেলপাড় আবু সাইদ (৩৫) ও শাওনকে (১৫) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনাটি তদন্ত করে যদি চালক হেলপাড়ের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
উল্লেখ্য, ফতুল্লার সাইনবোর্ড থেকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ৬ কিলোমিটার সড়কে সন্ধ্যার পর থেকে মোটরসাইকেলযোগে ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ছিনতাই করা হয়। তাদের হাত থেকে দিনমজুর, মাছ তরকারি বিক্রেতারাও বাদ যায় না। লিংক রোডের এ ৬ কিলোমিটারের মধ্যে কথিত বাউল গানের ক্লাব রয়েছে ৮টি। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সারারাত এসব ক্লাবে উচ্চ শব্দের সাউন্ডবক্স দিয়ে গান-বাজনা চলে। এতে প্রতিটি ক্লাবেই প্রাইভেটকার মোটরসাইকেল ইজিবাইক দিয়ে শত শত লোক এসে জমায়েত হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ গানের ক্লাবগুলোতেই ছিনতাইকারী, ডাকাত ও মাদক কারবারিরা গানের শ্রোতা হয়ে অবস্থান নেয়। এরপর সুযোগ বুঝে অপরাধ করেন। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রতিবাদ করেও গানের ক্লাবগুলো বন্ধ করা যায়নি। এলাকাবাসীর দাবি, গানের ক্লাবগুলো বন্ধ করে সাইনবোর্ড থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত ৩টি চেকপোস্ট বসানো হলে লিংক রোড থেকে ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদক কারবার কমে যাবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন