ঢাকা সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অধ্যক্ষের স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে মানববন্ধন

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০১:১৩ এএম

নওগাঁ সরকারি কলেজে অনিয়ম, দুর্নীতি, নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যক্ষের আপত্তিকর কথোপকথন ও কলেজ প্রশাসন কর্তৃক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কলেজ চত্বরে শিক্ষার্থী ও জুলাই যোদ্ধা সংসদ, আহত ও শহিদদের পরিবারের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

জানা যায়, কলেজের ছাত্রীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোসহ অবৈধ সম্পর্কে জড়াতে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ছাত্রীদের ওড়না ছাড়াসহ বিভিন্ন সাজে দেখার আবদার করেন তিনি। এতে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করায় ফুঁসে উঠেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকালে কলেজের গেটে ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোর স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে মানববন্ধন করা হয়। বিষয়টি যাচাই সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেনÑ নওগাঁ জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসেন, শিক্ষার্থী সাদনান সাকিব, শহিদ ফাহমিনের মা কাজী লুলুন মাখমিম (শিল্পী), কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনায়েদ হোসেন জুন ও শিক্ষার্থীর বাবা গোলাম রসুলসহ অন্যরা। মানববন্ধনে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হক। যিনি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আপত্তিকর কথোপকথনসহ ওড়না ছাড়া ছবি দেওয়ার জন্য বলেন। এসব বিষয় কাউকে জানানো হলে কৌশলে তাদের হুমকিও দেওয়া হয়। সম্প্রতি ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর কথোপকথন ছড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে কলেজ প্রশাসন দিয়ে মারধর করা হয়। এ ছাড়া কলেজে ভর্তিসহ বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়। এ সময় কলেজে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ অধ্যক্ষের শাস্তির দাবি জানানো হয়।

ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসেন বলেন, একজন অধ্যক্ষ হয়ে কীভাবে ছাত্রীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে পারেন। কীভাবে ছাত্রীর কাছ থেকে ওড়না ছাড়া ছবি চাইতে পারেন। এমন অধ্যক্ষের কাছে কীভাবে ছাত্রীরা নিরাপদ হতে পারে। কলেজে ছাত্রদের জন্য আবাসিক (হল) ও ক্যান্টিনের ব্যবস্থা নেই। অনেকবার বলার পরও তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে যায় না বা কলেজে আসে না, সে বিষয় নিয়ে তিনি কখনো ভাবেন না। তিনি শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে পারেননি। বরং অর্থ কীভাবে আত্মসাৎ করা যায়, তা নিয়ে ভাবেন। আপত্তিকর মন্তব্য করায় অধ্যক্ষের শাস্তির দাবি করছি।

জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, কলেজের উন্নয়নের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। কলেজের কোনো উন্নয়ন দৃশ্যমান নয়। অধ্যক্ষ কলেজে মাস্তান বাহিনী পুষে রেখেছেন। প্রায়ই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটছে।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।