ঢাকা সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নই দেখছেন জাকের

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০১:৩২ এএম

প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা জয়ের অভিযানে নেমেছে বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে বড় জয় তুলে যাত্রা করে তারা। কিন্তু গ্রুপ পর্বের পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছেন লিটন কুমার দাসরা। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার কারণে ৫ উইকেটে ১৩৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। জবাবে ৩২ বল হাতে রেখে ৪ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। এই হারে বাংলাদেশের সামনে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ওঠার পথই কঠিন হয়ে গেল। তবু টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন স্বপ্ন দেখছেন উইকেটরক্ষক ও ব্যাটার জাকের আলী অনিক।

আগামীকাল ১৬ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচটি যে লিটনদের জন্য টুর্নামেন্টে টিকে থাকার লড়াই। ম্যাচটি যে কঠিন পরীক্ষার হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এশিয়া কাপ জয়ের আশা ছাড়ছে না বাংলাদেশ। আফগানদের হারানোর দৃঢ় প্রত্যয়ও উচ্চারিত হয়েছে জাকেরের কণ্ঠে। শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর তিনি বলেন, ‘আশা ছাড়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা ম্যাচ জেতার জন্য খেলব, এই ম্যাচেই আমরা জেতার মানসিকতা নিয়ে আসছিলাম। হয়তো হয়নি। পরবর্তী ম্যাচে অবশ্যই আমরা জেতার মানসিকতা নিয়ে যাব। এ ছাড়া তো আমাদের কোনো উপায় নেই। আমরা টুর্নামেন্টে শুধু ম্যাচ খেলতে আসিনি। আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এসেছি। এক ম্যাচ হারাতেই এটা ড্রপ করা যাবে না। অবশ্যই আমরা পরবর্তী ম্যাচ জেতার জন্যই খেলব।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই যে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ, সেটি কাটিয়ে উঠে বড় স্কোর গড়তে পারেনি তারা। জাকের বলেন, ‘পাওয়ার প্লেতে উইকেট পতনই আমাদের মূল্য দিতে হয়েছে। তবে আমরা কীভাবে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারি, সেই পথ খুঁজব।’ মাঠে নামার আপনারদের একটু ছন্নছাড়া মনে হয়েছিল? এ প্রসঙ্গে জাকের বলেন, ‘ভালো না করলে তো অনেক কিছুই মনে হবে। পাওয়ার প্লেতে দুইটার বেশি উইকেট হারালে আসলে বড় স্কোর করাটা বেশি কঠিন হয়ে যায়। তবে আমি ও পাটোয়ারী চেষ্টা করেছিল দলকে যত দূর এগিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু হাতে উইকেট থাকত, তাহলে হয়তো আরও বেশি ঝুঁকি নেওয়া যেত।

ইনিংসের শেষ পাঁচ ওভারের ব্যাটিংটা প্রত্যাশিত হয়নি। ব্যাটারদের হাঁসফাঁস করতে দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে জাকের বলেন, ‘যতটুকু গরম ছিল, এটা স্বাভাবিক। মাঠে বাতাস একটা ফ্যাক্ট ছিল। দুই সাইডে মারা যায় না। বেশি সিঙ্গেলস খেললে একটু ক্লান্তিভাব আসে। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি। ওরা ভালো ডেথ ওভারে অনেক ভালো বোলিং করেছে। তবে আমরা ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে ভালো করিনি। যত ভালো পার্টনারশিপ হোক না কেন, আমি মনে করি ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা ভালো করিনি। যে কারণে ম্যাচটি আমাদের হাত থেকে চলে গেছে।’ টস জিতে সব সময় আগে ফিল্ডিং করার কারণেই কি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের শুরুতে বিপদে পড়তে হয়েছে? জাকের বলেন, ‘আসলে অভ্যাসের বলতে কী, আমরা সব সময় এই রকম প্র্যাকটিস করি। আসলে পরিকল্পনামাফিক হয়নি খেলাটা। আগে ব্যাটিং কিংবা পরে ব্যাটিং, এটা কোনো বিষয় নয়। আমরা ভালো করতে পারিনি। নতুন বলে পাওয়ার প্লেতে যদি আমরা দুটির বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলি, তাহলে এখানে খুবই কঠিন বড় স্কোর করা।’

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। দীর্ঘদিনের ক্যাম্পও হয়েছে। এশিয়া কাপের জন্য আরও বেশি প্রস্তুতি কি নেওয়ার দরকার ছিল? জাকের বলেন, ‘আসলে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি ছিল না। আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’ ওপেনিংয়ে তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমনের চার-ছক্কা মারার দিকে বেশি জোঁক থাকে। এ জন্য তারা আউট হলে তিন নাম্বারে যিনি ব্যাটিং করেন, তার জন্যও কাজটা কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। জাকের বলেন, ‘অবশ্যই আমি মনে করি যে, ওপেনিং ও নাম্বার থ্রিÑ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জিনিসটা মাথায় আছে আমাদের। অবশ্য তাদের এই জিনিসগুলোতে সতর্ক হতে হবে। পাওয়ার প্লেতে এই নয় যে, বলে বলে চার-ছয় মারতে হবে। এই জিনিসগুলো মাথায় রাখতে হবে। আমি নিশ্চিত যে, তারা এ জিনিসগুলো নিয়ে ভাববে। পরবর্তী ম্যাচে অবশ্যই তারা ভালো কিছু করবে।’ জাকের মনে করেন, ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে ভালো করেনি বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আরেকটু টাইমিংয়ের দিকে মনোযোগী হতাম ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে, তাহলে ভালো হতো। আমি ও পাটোয়ারী জুটি গড়েছিলাম, এর মানে এই নয় যে আমরা দুজন খুব ভালো। আমরা সবাই মিলে বাজে খেলেছি। সবাই মিলে আমরা হেরেছি। আমার মনে হয় যে, সবাকেই এক সঙ্গে ভালো করতে হবে।’ ব্যাটিংয়ে বাতাস কতটা প্রভাব রেখেছে? জাকের বলেন, ‘এ জিনিসটা মাথায় রাখতে হয়। এটা আমি আগেও বললাম যে, দুই পাশে মারা যায় না। এক পাশে গ্রাউন্ডে বেশি খেলতে হয়। এক পাশে মারতে পারবেন। যেদিকে বাতাস থাকে। এ জিনিসগুলো মাথায় রেখে খেলতে হয়। আসলে বারবার একই কথা হয়ে যাচ্ছে, টপ অর্ডারকে বেশি দোষারোপ করা হয়ে যাচ্ছে। সঠিকভাবে শুরুটা হলে এই জিনিসগুলো এত ঝুঁকির মনে হতো না। যেহেতু হাতে উইকেট ছিল না, তাই এত ঝুঁকি নেওয়া যাবে না একটা টোটালের জন্য।’