সাউথইস্ট এশিয়ার ছোট দেশ ব্রুনাই প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেলের মাধ্যমে সমৃদ্ধ একটি রাষ্ট্র। দেশটির গড় মাথাপিছু আয় অনেক বেশি। জনসংখ্যা কম হওয়ায়, গৃহস্থালি থেকে শুরু করে নির্মাণ, হোটেল, সিকিউরিটি এবং কারিগরি পেশায় রয়েছে বিদেশি শ্রমিকদের বিশাল চাহিদা।
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেক শ্রমিক ব্রুনাইয়ে যান। কিন্তু আগে এই নিয়োগ হতো বেসরকারি চ্যানেলে, যেখানে প্রতারণার ঝঁকি ছিল অনেক বেশি। এখন সরকারিভাবে জিটুজি ব্যবস্থায় ব্রুনাইয়ের শ্রমবাজার খুলে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য।
কোন কোন খাতে নিয়োগ দেওয়া হয়?
সরকারিভাবে ব্রুনাইয়ে নিয়োগ চলছে বেশ কয়েকটি খাতে। এর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন খাতগুলো হলো-
নির্মাণ খাতে প্লামার, ইলেক্ট্রিসিয়ান, ওয়েল্ডার। হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কুক, কিচেন হেল্পার, ওয়েটার, পরিচ্ছন্নতা ও হাউজকিপিং সেক্টরে ক্লিনার, হাউজমেইড (নারী) হিসেবে। এসি টেকনিশিয়ান, মেকানিক, সিকিউরিটি গার্ড। হেভি ও লাইট ড্রাইভার হিসেবে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই পদ রয়েছে।
বেতন ও সুবিধা কেমন?
সরকারিভাবে ব্রুনাইতে গেলে আপনি পাচ্ছেন আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা। যেমন- বেতন প্রায় মাসিক ইঘউ ৫০০-১২০০ ব্রুনাই দিনার যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪০,০০০-৯৫,০০০ টাকা। থাকা ব্যবস্থা কোম্পানিতে। খাবারের জন্য অনেক কোম্পানি সরবরাহ করে থাকে তবে কিছু ক্ষেত্রে নিজ খরচ করে খেতে হয়। চিকিৎসা সুবিধার জন্য কোম্পানি ইনস্যুরেন্সের মাধ্যমে কভার করে থাকে। বিমান ভাড়া, যাত্রা ও চুক্তি শেষে ফেরার খরচ কোম্পানি বহন থাকে। ছুটি সাধারণত চুক্তিভিত্তিক বা বার্ষিক ছুটি হয়ে থাকে।
আবেদন প্রক্রিয়া
সরকারিভাবে ব্রুনাইয়ে যেতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে ইঙঊঝখ (বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড) এর মাধ্যমে। নিচে ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো-
িি.িনড়বংষ.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় সেখানে বিজ্ঞপ্তি দেখতে হবে নিয়মিত। এরপর অনলাইন আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে, পাসপোর্ট, ছবি, প্রশিক্ষণ সনদ ইত্যাদি আপলোড করে। এরপর নির্ধারিত দিনে সরাসরি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য বিস্তারিত জানতে চাইবে।
মেডিকেল পরীক্ষা
নির্বাচিত প্রার্থীরা নির্ধারিত মেডিকেল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা দেন
চুক্তি ও ভিসা
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে নিয়োগদাতার সঙ্গে চুক্তি ও ভিসা প্রসেসিং হয়
প্রশিক্ষণ ও ফ্লাইট
ইগঊঞ-এর ওরিয়েন্টেশন কোর্স ও তারপর নির্ধারিত ফ্লাইটে যাত্রা
এই পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো দালাল জড়িত নয় এবং খরচও একেবারে সীমিত বা শূন্য।
বিদেশে কাজ মানেই জীবনের উন্নয়ন। কিন্তু সেটা হতে হবে সঠিক পথে, বৈধ উপায়ে, নিরাপদ প্রক্রিয়ায়। ব্রুনাইয়ের শ্রমবাজার সেই সুযোগ এনে দিয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য, আর তা সম্ভব হয়েছে সরকারিভাবে জিটুজি ব্যবস্থার মাধ্যমে। আপনার দক্ষতা যদি থাকে, ইচ্ছা যদি থাকে- তাহলে আজই প্রস্তুতি নিন। চোখ রাখুন সরকারি ওয়েবসাইটে। স্বপ্নপূরণ হোক নিরাপদ প্রবাস জীবনের মাধ্যমে।