ঢাকা সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কৃষি ভিসায় গ্রীসে

সীমিত সময়ের জন্য কাজের বড় সুযোগ

মিনহাজুর রহমান নয়ন
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০১:৫০ এএম

গ্রীসের কৃষি ভিসার সুযোগ মূলত মৌসুমি কাজের জন্য। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সময় (সাধারণত ৬ থেকে ৯ মাস) কৃষি ও পশুপালন খাতে শ্রমিক নেওয়া হয়। এটি স্থায়ী ভিসা নয়, তবে বৈধভাবে ইউরোপে কাজের দরজা খুলে দেয়। ইউরোপের কৃষি খাতের জন্য শ্রমশক্তি সরবরাহে বাংলাদেশি কর্মীদের সামনে দরজা খুলেছে অনেকদিন ধরে। গ্রীস সম্প্রতি মৌসুমি কৃষি খাতে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের প্রক্রিয়া সহজ করেছে। এর ফলে দেশের গ্রাম অঞ্চলের তরুণ প্রজন্ম যারা খেতে খামারে কাজ করে তাদের কাছে এটি হয়ে উঠতে পারে বৈধ উপায়ে বিদেশে কাজের এক বড় সুযোগ।

সুবিধা

গ্রীসে কৃষি ভিসার  সুবিধা হলো বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ নির্দিষ্ট মেয়াদের (সাধারণত ৬ থেকে ৯ মাস) জন্য গ্রীসে বৈধভাবে কৃষি ও পশুপালন খাতে কাজ করা যায়।  ভিসা ও রেসিডেন্স পারমিট থাকার কারণে অবৈধ অবস্থানের ঝুঁকি থাকে না। কর্মীরা গ্রীসের শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যূনতম মজুরি পান। অতিরিক্ত সময় কাজ করলে ওভারটাইম সুবিধাও মেলে। নিয়োগকর্তার মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা (ঝড়পরধষ ঝবপঁৎরঃু) সুবিধা পাওয়া যায়। কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য বিমার ব্যবস্থা থাকে, যা চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস করে। অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা বিনামূল্যে বা কম খরচে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেন। বাসস্থানের মান ও নিরাপত্তা আইন দ্বারা নির্ধারিত থাকে। পুনরায় কাজের সুযোগ। মৌসুমি কাজ শেষ হওয়ার পর দেশে ফিরে এসে পরবর্তী মৌসুমে আবার ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। বৈধভাবে বারবার কাজ করার সুযোগ থাকায় দীর্ঘমেয়াদি উপার্জনের পথ তৈরি হয়। ইউরোপের কৃষি প্রযুক্তি, আধুনিক কাজের ধরণ ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ মেলে। ভবিষ্যতে ইউরোপের অন্য দেশে কাজ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়। বাংলাদেশে টাকা পাঠানো যায় বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে। এর ফলে পরিবার ও দেশ দুটিই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়।

কৃষি মৌসুমে শ্রমিকের চাহিদা

গ্রীস ইউরোপের একটি কৃষি সমৃদ্ধ দেশ। প্রতিবছর টমেটো, জলপাই, আঙুরসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল তোলার সময়ে বিপুল শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। এজন্য তারা বিদেশ থেকে শ্রমিক নেয় নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। সাধারণত এই ভিসার মেয়াদ থাকে ৬ থেকে ৯ মাস।

আবেদন প্রক্রিয়া

ভিসা পেতে হলে প্রথমেই গ্রীসের কোনো কৃষি মালিক বা কোম্পানির সঙ্গে কাজের চুক্তি করতে হয়। পরে নিয়োগকর্তা স্থানীয় প্রশাসন থেকে অনুমোদন নেয়। সেই অনুমোদনের ভিত্তিতে আবেদনকারী ঢাকার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার, বনানী অথবা গ্রীস কনস্যুলেট, রাজউক এভিনিউ তে গিয়ে

টাইপ ডি ন্যাশনাল-ডি ভিসা এর আবেদন

জমা দিতে পারেন। গ্রীসে পৌঁছে শ্রমিকদের নিতে হয় রেসিডেন্স পার্মিট ই-৬ সিজনাল এগ্রিকালচার পারমিট।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ভিসার জন্য দরকার হয় বৈধ পাসপোর্ট, নিয়োগকর্তার চুক্তি ও অনুমোদনপত্র, বাসস্থানের প্রমাণ, স্বাস্থ্য বিমার কাগজপত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং প্রয়োজনে মেডিকেল সার্টিফিকেট।

খরচ ও সময়

রেসিডেন্স পারমিটের ফি প্রায় ৯১ ইয়রো। ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস, আর পারমিট হাতে পেতে লাগে প্রায় ৫০-৮০ দিন।

সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

গ্রীসে কৃষি খাতে কাজ করা শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পান। অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা বাসস্থানেরও ব্যবস্থা করে দেন। বৈধভাবে বিদেশে কাজের সুযোগ পাওয়ায় এটি বাংলাদেশের তরুণদের জন্য হতে পারে এক নতুন সম্ভাবনার পথ। সঠিক তদারকি ও তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত হলে গ্রীসের এই কৃষি ভিসা বাংলাদেশের কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় রচনা করবে।