ঢাকা শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মাহমুদার মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন

হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয় পিতা

যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:৪৫ এএম

যশোরের মণিরামপুরে মাদ্রাসা ছাত্রী মাহমুদা সিদ্দিকাকে (১৩) হত্যার পর মৃতদেহ পুকুরে ফেলে দেয় তার পিতা আইনুল হক। পুকুরে নিক্ষেপের সময় পরনের পায়জামা খুলে থেকে যায় তার হাতে। পরে মেয়ের ওড়না ও পায়জামা পুুকুরে ফেলে দেন তিনি। আইনুল হককে আটকের পর মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে মাহমুদা সিদ্দিকার হত্যারহস্য উদ্ঘাটন হলো।

জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রোহিতা গ্রামের একটি পুকুর থেকে মাহমুদার নগ্ন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে রটানো হয়, রুটি চুরির অপবাদ সইতে না পেরে সাঁতার না জানা কিশোরী পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আগের দিন মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে গ্রামের একটি দোকান থেকে রুটি চুরি করায় তার মা জনসমক্ষে তাকে জুতা পেটা করেন। অনেকেই মনে করেন, এতে অভিমানে সে আত্মহত্যা করতে পারে। ফলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

পরিবারের বাধা সত্ত্বেও মণিরামপুর থানা পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। মাহমুদার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে ময়নাতদন্তে উল্লেখ করা হয় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ফলে গত ১২ সেপ্টেম্বর কিশোরীর মা শাহিনুর আক্তার বাদী হয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় মণিরামপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।

মণিরামপুর থানার ওসি বাবলুর রহমান খান জানান, খুনের ঘটনায় মাহমুদার বাবা আইনাল হককে ঘিরে পুলিশের সন্দেহ হয়। ফলে পুলিশ তাকে আটক করলে মেয়েকে খুনের দায় স্বীকার করে। গত বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন,

রুটি চুরি করার কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েকে মারধর করেছিলাম। সন্ধ্যার আগে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের পুকুর পাড়ে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে রাখে। এশার নামাজ শেষে লাশ পুকুরে লাশ ফেলে দেওয়া হয়।  লাশের পা ধরে পুকুরের পানিতে নিক্ষেপের সময় পরনের পায়জামা খুলে তার হাতে থেকে যায়। পরে সেই পায়জামা ও মেয়ের ওড়না পুকুরে ফেলে দেয় আয়নুল হক। হত্যার আগে মাহমুদাকে ধর্ষণ করা হয়নি। ফলে মামলা থেকে ধর্ষণের ধারা বাদ দেওয়া হবে বলে জানান ওসি বাবলুর রহমান।