*** ৫ বছরেও হয়নি সংস্কার
*** দুর্ভোগে চরাঞ্চলের অর্ধশত গ্রামের হাজারো মানুষ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ঝিনাই নদীর ওপর ভেঙে যাওয়া শুয়াকৈর গার্ডার ব্রিজ দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে। ২০২০ সালের বন্যায় ব্রিজটির মাঝখানের চারটি পিলার ও তিনটি স্প্যান ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দীর্ঘদিনেও ব্রিজটি পুনর্নির্মাণ বা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার চরাঞ্চলের অর্ধশত গ্রামের হাজারো মানুষ। উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামে অবস্থিত এ সেতু ছিল উপজেলা সদরের সঙ্গে চরাঞ্চলের একমাত্র সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন কৃষক, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও জরুরি চিকিৎসাসেবায় প্রয়োজনীয় মানুষজন।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে এম এইচ এন্টারপ্রাইজ। ২০০৬ সালে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর থেকে গত ১৪ বছর দুইটি উপজেলার মানুষের যাতায়াত ও কৃষিপণ্য পরিবহন ছিল নির্বিঘœ। কিন্তু ২০২০ সালের ২২ জুলাইয়ের ভয়াবহ বন্যায় ব্রিজটির প্রায় ৬০ মিটার ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর কৃষকেরা উৎপাদিত ফসল ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারছেন না। যাতায়াত ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া সেতুটি সচল থাকায় এলাকার হাজারো বেকার যুবক অটোরিকশা ও ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন, এখন তারা বেকার হয়ে পড়েছেন। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও মুমূর্ষু রোগীদের জন্যও ভোগান্তির শেষ নেই।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা মনজুরুল ইসলাম, আলী আকবর, সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, হাফিজুর রহমান ও বাছেদ মিয়া বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম এলেই ভোগান্তি আরও বাড়ে। বহুবার দাবি জানালেও কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। সেতুটি দ্রুত নির্মাণ বা সংস্কার করা হলে মানুষ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া তমাল জানান, ব্রিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি প্রকল্পের আওতায় সুনার টেস্ট করা হয়েছিল। ব্রিজের ভাঙা অংশ নিচেই পড়ে আছে। বর্তমানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের চেষ্টা করছি। চরাঞ্চলের হাজারো মানুষ আশায় আছেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর হলেও শিগগিরই তাদের দুঃখ-দুর্ভোগের অবসান ঘটবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন