মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের সময় হোসেন্দী ইউনিয়নের টান বলাকিচর এলাকায় এ সংঘর্ষে প্রায় ৩০ জন আহত হন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
প্রাথমিকভাবে আহতদের মধ্যে বিএনপি সমর্থিত মাহফুজ (৫৮), সাহাদাত (৩৫), আনার (৫৩), নুরুল ইসলাম (৫৭) ও আসিফ (২২)–এর নাম জানা গেছে। এর মধ্যে নুরুল ইসলাম ও আসিফকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের নেতা হত্যা মামলার আসামি গিয়াস উদ্দিন, হোসেন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান মন্টু চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা নাজমুলের নেতৃত্বে যুবদল নেতা আনোয়ার প্রধানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। একই সঙ্গে বিএনপির ওয়ার্ড কার্যালয়সহ একাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
এ ছাড়া চলতি বছরের বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা এখনো চলমান। মামলার আসামি নাজমুল, গিয়াস উদ্দিন ও মন্টু চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন এলাকা ছেড়ে বাইরে ছিলেন। ২৩ সেপ্টেম্বর তারা এলাকায় প্রবেশ করলে দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
বিএনপি সমর্থকরা ওই আসামিদের এলাকায় থাকতে দেবেন না বলে জানায়। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থকরাও পাল্টা অবস্থান নেন। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এ বিষয়ে বিএনপি সমর্থিত কর্মী নুরুল ইসলাম জানায়, গিয়াস উদ্দিন, মন্টু, নাজমুল, রিপন চারজনই আওয়ামী লীগ করে। আমরা বিএনপি করি আমার ভাই যুবদলের সেক্রেটারি তাই আমাদের দেখতে পারে না ওরা। এ চারজন মিলে আমাদের ওপর হামলা করছে, ঘরবাড়ি ভাংচুর করে, আমাদের কিছু রাখেনি, ক্লাব ভাঙছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি, আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসার জন্য এখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এলাকায় বাইরে যেতে দিচ্ছে না। তাদের আরও অভিযোগ সঠিক সময়ে পুলিশকে জানানো হলেও তারা ঘটনাস্থলে যেতে বিলম্ব করছে।
হোসেন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান মন্টু বলেন, বর্তমানে বিএনপির পার্টি অফিস ভাঙচুর করতে যাব এটা মানা যায় না। আজ উল্টো তাদের হামলায় আমাদের একাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এর আগে নাটকীয়ভাবে নিজেদের অফিস ভেঙে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের এলাকায় প্রবেশে বাধা দিয়েছিল। সেই থেকেই আমরা এলাকার বাইরে ছিলাম।
সংঘর্ষের পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
গজারিয়া থানার ওসি আনোয়ার আলম আজাদ জানান, আওয়ামী লীগের হামলা ও বিএনপি পার্টি অফিস ভাঙচুরের খবরে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শুনেছি বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং এলাকায থমথমে অবস্থায় রয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন