রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

উন্নয়নবঞ্চিত ‘জেলখানা’ গ্রাম

বছরের পর বছর বন্দিজীবন গ্রামবাসীর

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

বছরের পর বছর বন্দিজীবন গ্রামবাসীর

** পথঘাট নেই, স্বাস্থ্যসেবা নেই, বছরের পর বছর বন্দিজীবন গ্রামবাসীর
** স্কুলপড়ুয়া শিশুদের কাদায় হেঁটে যাতায়াত, অসুস্থদের নিতে হয় বাঁশে চেয়ার বেঁধে
** মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ নেই বললেই চলে
** চিকিৎসার অভাবে একাধিক মানুষের মৃত্যু
** সরকারি বরাদ্দ পৌঁছায় না, যায় প্রভাবশালীদের পকেটে

খর¯্রােতা পায়রা নদীর তীরে অবস্থিত ‘জেলখানা, চারাভাঙ্গা ও ঝিনাইবাড়ীয়া গ্রাম। জেলখানা গ্রামের নাম শুনে মনে হতে পারে এখানে কোনো কারাগার আছে। বাস্তবে এটি বরগুনা সদর উপজেলার ৯নং এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের একটি গ্রাম। কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা ও মৌলিক উন্নয়ন থেকে বঞ্চনার কারণে গ্রামবাসীর জীবন যেন সত্যিকারের বন্দিদশার চেয়েও কঠিন হয়ে উঠেছে।

গ্রামগুলোতে শহর বা বাজারে যাতায়াতের জন্য কোনো পাকা রাস্তা নেই। ২০০৩ সালে মাত্র ১ হাজার মিটার ইট বিছিয়ে যে কাঁচা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল, আজ সেটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। খানাখন্দে ভরা সেই সড়কে হাঁটাচলা করাই যেন দায়। বৃষ্টির মৌসুমে সড়কটি কাদা-পানিতে তলিয়ে যায়, পথচারীদের চলাচল হয় গামছা বেঁধে কোমর পর্যন্ত পানি পেরিয়ে। শিশু ও শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া হয় কাদা মেখে ও বৃষ্টিতে ভিজে। অসুস্থ মানুষদের হাসপাতালে নিতে হয় ভ্যানে করে বা বাঁশে চেয়ার বেঁধে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ এলেও তা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পকেটে চলে যায়। ফলে এখনো এই গ্রামের রাস্তাঘাট, সেতু, যোগাযোগব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও আশ্রয়কেন্দ্র সব কিছুরই চরম অভাব। মোবাইল ফোনে কথা বলাও সম্ভব নয়, ইন্টারনেট ব্যবহার তো দূরের কথা, কথা বলতে হলে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে গিয়ে দাঁড়াতে হয়।

গ্রামটির মানুষের ভোগান্তির চিত্র ফুটে ওঠে ‘সোনালী স্বপ্ন যুব সংসদ’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় জেলখানা চৌমুহনী বাজারে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ মাওঃ মো. আল-আমিন। এতে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সেলাইমান কবির ইউনুস, সদস্য সচিব আক্তারুল হক, জুয়েল ম্যালকার, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. রাজিব, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সভাপতি মো. সালমান।

এ সময় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. রাজীব গ্রামের ১৩ দফা উন্নয়ন দাবি উত্থাপন করেন। বক্তারা বলেন, ‘বিশ্ব যখন এআই যুগে প্রবেশ করেছে, তখনো জেলখানা গ্রামের মানুষ কাদা-মাটি, অন্ধকার আর বিচ্ছিন্নতার মধ্যে জীবনযাপন করছে। এটি কোনো স্বাধীন দেশের চিত্র হতে পারে না।’

স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় বা বড় দুর্যোগে গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিতে পারে না কারণ এখানে কোনো সাইক্লোন শেল্টার নেই। জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থাও অনুপস্থিত। কিছুদিন আগে চিকিৎসার অভাবে এক কিশোরের মৃত্যুও ঘটে।

অবহেলা ও অনুন্নয়নের চাপে জেলখানা গ্রামের মানুষ আজ প্রকৃত বন্দির মতোই জীবন কাটাচ্ছে। সরকারি নজরদারি ও কার্যকর উন্নয়ন না এলে এই গ্রামের ভাগ্য বদল হওয়া কঠিন বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!