ঘনঘন লোডশেডিং, সচল মিটারকে অচল দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, ব্যবহৃত ইউনিটের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলের মিল না থাকা, লো-ভোলটেজ দিয়ে হাই ভোলটেজের বিল করা, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, তবুও বিদ্যুৎ বিলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পল্লিবিদ্যুৎ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে। সংযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের টাপুর চর বাজারে। সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির হাতে ২৫০ টাকার স্থলে সাড়ে ৩ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের টাপুর চর বটতলা মোড়ে ভাড়া দোকান নিয়ে মনিহাড়ি ব্যবসা করেন। তার এই মনিহাড়ি দোকানের নামে করা সেপ্টেম্বর মাসের বিদ্যুতের এ বিলটি চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তার হাতে পৌঁছে দেন স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের একজন বিল বিতরণকারী কর্মী। সংযোগ না থাকলেও ওই বিলে ২১৪১৫০৮২ মিটার নম্বরের বিপরীতে বর্তমানে ব্যবহৃত ৬০ ইউনিট বিদ্যুতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মনিহাড়ি দোকান-ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটি বিল তৈরি করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার দোকানে বিদ্যুতের কোনো সংযোগ নেই। জুন মাসে বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিদ্যুৎ অফিসের মাঠকর্মীরা। এ অবস্থায় জুলাই-আগস্ট দুই মাসের বিল ৫০০ টাকা পরিশোধ করেছি। কিন্তু হঠাৎ সেপ্টেম্বর মাসে আমার নামে ৩ হাজার ৫০০ টাকার বিল পেয়ে আশ্চর্য হয়েছি।’ তিনি দাবি করেন, রাতের বেলা তিনি মোমবাতি জ্বালিয়ে দোকান করেন। সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মিটার আছে, কিন্তু সংযোগ নেই, তবুও বিল। আমরা এ কোন দেশে বাস করছি?
স্থানীয় বাসিন্দা দোকান-মালিক মো. জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা সত্ত্বেও দুই মাসের বকেয়া বিল ৫০০ টাকা পরিশোধ করেছি এবং মিটার মালিক পরিবর্তনসহ নতুন করে সংযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন আমাকে হয়রানি করছেন। তারা বলছেন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে।’
ওই এলাকায় বিদ্যুতের বিল বিতরণকারী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষেই সাইফুলের মনিহাড়ি দোকানে বিদ্যুতের কোনো সংযোগ নেই। আমি শুধু অফিস থেকে পাঠানো বিলের কাগজটি সাইফুলের হাতে পৌঁছে দিয়েছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিটার রিডাররা বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে বিদ্যুতের বিল বিতরণ ও মিটার দেখে ইউনিট সংগ্রহকারীদের গাফিলতির কারণে হয়তো ওই ব্যক্তি সংযোগ ও মিটার পাননি, যে কারণে এ ঘটনাটি ঘটেছে।’
জামালপুর পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি রৌমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ রকম যদি হয়ে থাকে, দোকান-মালিক আমার কাছে এলে সমস্যা সমাধান করব এবং তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন