নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) মো. রহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে নামজারি কাজ করেন এবং টাকা না দিলে হয়রানি করেন সেবাগ্রহীতাদের।
রহিদুল ইসলাম উপজেলার প্রসাদপুর ও কাঁশোপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে উপ-সহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০২৫ সালের ১৬ এপ্রিল এ পদে যোগ দেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের নানা অভিযোগ উঠছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি উপজেলার পার-ইনায়েতপুর গ্রামের আবুল হোসেন মাস্টার অভিযোগ করেন, তিনটি নামজারির কাজে রহিদুল ইসলাম তার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। পরে উপজেলা ভূমি অফিসের নামে আরও সাড়ে ৭ হাজার টাকা দাবি করেন। আবুল হোসেন জানান, ‘আমি ৭ হাজার টাকা দিয়েছিলাম, কিন্তু আর দিতে পারবো না বলায় তিনি বলেন, সাড়ে ৭ হাজার টাকাই দিতে হবে। কারণ এটা উপজেলা অফিসে দিতে হবে। বাকি ৫০০ টাকা না দিলে কাজ হবে না।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, টাকা নেওয়ার পরও রহিদুল ইসলাম বিভিন্নভাবে হয়রানি শুরু করেন। পরে প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ম-লের সহযোগিতায় নামজারির কাজ সম্পন্ন হয়। চেয়ারম্যানের কথাও তিনি মানেন না। শেষে রাগ করে কাজ পার করে দিলেও খতিয়ান বদলে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার চেষ্টা করেন।
প্রসাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ম-ল বলেন, ‘এই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ আছে। অনেক মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের পাশে ভূমি অফিস থাকায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ এসে অভিযোগ করেন। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আবুল মাস্টার আমার বাবার মতো মানুষ। আন্তরিকভাবে তার কাজ করে দিয়েছি।’ তবে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে পাশ কাটিয়ে যান এবং পরে দেখা করার প্রস্তাব দেন।
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাবিল নওরোজ বৈশাখ বলেন, ‘নামজারির নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমার জানা নেই। তবে কেউ যদি ঘুষ গ্রহণ করে থাকে, তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন