- ১৭ জন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে উধাও
- ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা এনজিও অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন
- অভিযুক্ত কর্মী শিমুল হোসেনের ফোন বন্ধ, অফিস কর্তৃপক্ষ দায় এড়াচ্ছে
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ‘সমাধান’ নামে একটি এনজিওর এক কর্মীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই কর্মী ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সঞ্চয়ের টাকা গ্রহণ করে পালিয়ে গেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটচাঁদপুর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত সমাধান এনজিওর সাবেক কর্মী শিমুল হোসেন কৌশলে তালসার গ্রামের ১৭ জন গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট প্রায় ৬ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। পরে তিনি অফিসে আর যোগ না দিয়ে গা-ঢাকা দেন। এ ঘটনায় গত সোমবার সকালে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সমাধান এনজিওর স্থানীয় অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন।
অভিযুক্ত কর্মী শিমুল হোসেন যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি দক্ষিণপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী শাহানাজ জানান, ‘আমাদের পাড়ায় সমিতি খুলবে বলে দুই মাস আগে শাখা ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান ও কর্মী শিমুল হোসেন আমাদের বাড়িতে আসেন। তারা ঋণ পাওয়ার আশ্বাস দেন এবং সঞ্চয় বাবদ টাকা নেন। আমি বিশ্বাস করে মোট ৫১ হাজার ৬২০ টাকা জমা দিয়েছি। কিন্তু আজ অফিসে এসে শুনি শিমুল টাকা নিয়ে পালিয়েছে।’
আরেক ভুক্তভোগী সাহারা খাতুন বলেন, ‘আমার ঘর নির্মাণের জন্য ৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা ছিল। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৫১ হাজার ৬২০ টাকা জমা দিই। কিন্তু এখন জানানো হচ্ছে, শিমুল দুই মাস আগেই চাকরি ছেড়ে গেছে।’
এমন অভিযোগ করেছেন আরও বেশ কয়েকজন গ্রাহক, তানিয়া, শিপালি, রোকেয়া, ছায়মা, মান্নান, শারমিন, তারাম, ওসমান, বিজলী, নাজমা, শ্রীরাম, খাইরুল ও বন্যা খাতুন। তাদের দাবি, অফিস কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা থাকায় প্রতারণা সহজ হয়েছে।
ভুক্তভোগী শ্রীরাম বলেন, ‘গতকালও অফিসে এসে দেখি কর্মীদের নামের তালিকায় শিমুলের নাম আছে। আজ সেই তালিকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, ম্যানেজার বিষয়টি জানতেন।’
তবে সমাধান এনজিওর শাখা ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আগে থেকে ঝুলানো তালিকা আজ সরিয়েছি। কর্মী শিমুল দুই মাস আগে চাকরি ছেড়ে গেছে। সদস্যরা আমাদের অনুমতি ছাড়া, পাশবই ছাড়াই সরাসরি শিমুলের কাছে টাকা দিয়েছেন, তাই এ টাকায় অফিসের দায় নেই।’
সমাধান এনজিওর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (আরএমও) নুরুল হোসেন বলেন, ‘ঘটনা জানার পর আমি চৌগাছা থেকে এসে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযুক্ত শিমুল হোসেন ২০২৪ সালের ১ আগস্ট ওই শাখায় যোগ দেন এবং ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। তার দায়দেনা ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। বিষয়টি প্রধান কার্যালয়ে জানানো হয়েছে এবং শিমুলের কাছ থেকে টাকা আদায় করে গ্রাহকদের ফেরত দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।’ অভিযুক্ত শিমুল হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন