জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে ল্যাম্পপোস্ট (সড়কবাতি) থাকলেও তাতে জ¦লছে না বাতি। এতে করে রাতে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনচালকেরা। সেই সঙ্গে এলাকায় বাড়ছে চুরি, ছিনতাইয়ের আতঙ্ক। স্থানীয়দের দাবি, প্রায় পাঁচ থেকে ছয় মাস ধরে এ সমস্যার সৃষ্টি হলেও সড়কবাতিগুলো জ¦ালানোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার ও শনিবার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ- জামালপুর আঞ্চলিক সড়কের তালতলা মোড় থেকে কামারবাড়ী পর্যন্ত সড়কে বসানো ডিজিটাল লাইটগুলোর কোনোটাই জ¦লছে না। সড়কের বকশীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে কালিকাপুর জিন্দেগী মোড় পর্যন্ত ডিজিটাল বাতিগুলোও বন্ধ। এ ছাড়া পৌর শহর থেকে চিকাজনী গুলুরঘাট, হাসপাতাল, নির্বাহী এলাকা, জাম্বিল বাজার, বেলতলী বাজার থেকে কালীতলা ও জিল-বাংলা চিনিকল পর্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের বাতিগুলো অনেক দূর পর পর দু-একটা জ¦লতে দেখা গেছে। মূল শহর ও আবাসিক এলাকায় কিছু সড়কবাতি জ¦লতে দেখা গেলেও মহল্লার অধিকাংশ সড়কে সড়কবাতি জ¦লে না।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত দেওয়ানগঞ্জে পৌরসভা গঠিত হয়। ২০১৩ সালে পৌরসভাটি ‘খ’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়। পৌরসভায় বিভিন্ন সময়ে দুই দফায় কোটি টাকার প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে খুঁটি নির্মাণ, নতুন তার সংযোগ, বেইস নির্মাণসহ ৩১৫টি ডিজিটাল সড়কবাতি বসানো হয়েছে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকা, পাড়া ও মহল্লার সড়কে সাধারণ সড়কবাতি বসানো হয়েছে ৩৫০টির মতো।
পৌর শহরের কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিব বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরে দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ সড়কের কালিকাপুর এলাকার সড়কবাতিগুলো জ¦লে না। এতে পথচারীদের অন্ধকারে পথ চলতে হচ্ছে। পৌরসভায় নাগরিক সেবার মধ্যে সড়কবাতিও একটি সেবা। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এই সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকার বাসিন্দারা।
চিকাজানী এলাকার বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন পলাশ বলেন, সড়কে ল্যাম্পপোস্ট থাকলেও সেগুলো ঠিকমতো জ¦লে না। এতে করে মহল্লা অন্ধকার হয়ে থাকে। এতে সড়কে চলাচলে দুর্ভোগের পাশাপাশি এলাকাবাসীকে চুরি, ছিনতাইয়ের আতঙ্কে থাকতে হয়। সড়কবাতিগুলো জ¦লার ব্যবস্থা করা হলে অন্ধকার দূর হওয়ার পাশাপাশি ছিনতাইয়ের আতঙ্কটাও কেটে যাবে।
স্বাগতম দাস নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা নিয়মিত পৌর কর পরিশোধ করি। পৌরসভার বাসিন্দা হিসেবে সুপেয় পানি, সড়কবাতি, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ময়লা-আবর্জনা অপসারণের ব্যবস্থাসহ যেসব সেবা পৌরবাসীর পাওয়ার কথা, তা আমরা পাচ্ছি না। সেবার মধ্যে পৌর এলাকার কিছু কিছু পাড়া ও মহল্লায় সড়কবাতি বসানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বাতি ঠিকমতো জ¦লে না। দ্রুত সড়কবাতিগুলো মেরামতসহ বাকি এলাকাগুলোতেও সড়কবাতি বসানোর দাবি জানাই।’
জানতে চাইলে পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেলুর রহমান বলেন, পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ডিজিটাল লাইট বসানো হয়েছে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন মহল্লায় সড়কবাতি আছে। বিভিন্ন সড়কের অকেজো, নষ্ট বাতিগুলো চিহ্নিত করার কাজ চলছে। খুব দ্রুত সেগুলো ঠিক করা হবে।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল ইসলাম বলেন, পৌর শহরের সড়কগুলো আলোকিত করতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ডিজিটাল ও সাধারণ ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। কয়েকটি সড়কের ডিজিটাল লাইটগুলোয় ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সেগুলো জ¦লছে না। তবে নতুন লাইট কেনা হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে লাইটগুলো প্রতিস্থাপন করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন