সিলেটজুড়ে চলমান তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আষাঢ় মাসের শেষপ্রান্তে এসে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই জেলায় গরম যেন অসহনীয় রূপ নিয়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে সিলেটের তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তবে বাস্তব অনুভূতিতে তা প্রায় ৪৬ ডিগ্রির মতো ভয়াবহ ছিল।
এদিকে গত শুক্রবার ও শনিবার (১১ ও ১২ জুলাই) গরমের দাপট এবং রাতের বৃষ্টিহীনতায় পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে ওঠে। আজ রোববার সকাল থেকেই সূর্যের প্রচণ্ড তাপে জনজীবন নাকাল হয়ে পড়ে। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা ও গরমের মাত্রাও বেড়ে যায়।
সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও রাস্তাঘাটে চলাচলরত পথচারীরা। রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। যান চলাচলও কমে আসে। প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাইরে বের হচ্ছেন না।
জিন্দাবাজার এলাকার রিকশাচালক ফজর আলী বলেন, ‘ইলা গরম দিলে রুজি-রোজগার করা যাইত না। ইলা গরমে রিকশা চালাইলে ভিতর ফাটি যায়। গরম বাড়ার লাগি আগের মতো ইনকাম নাই। মেঘ (বৃষ্টি) দিলে বালা লাগত’ না হয় বাঁচার উপায় নাই আমরার মতো গরিবদের।’
মজুমদারী এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদ বলেন, ‘আজকের গরমটা অনেক বেশি। এই গরমে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।’
এদিকে, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। তবে কিছুটা স্বস্তির সম্ভাবনাও রয়েছে- দেশের বিভিন্ন জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, ‘সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল নয়টার দিকে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক স্থানে এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কিছু এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে, যা হয়তো এই অসহনীয় গরম থেকে সাময়িক স্বস্তি এনে দিতে পারে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ সময় অতিরিক্ত গরমের ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে বলছেন, বেশি করে পানি পান করতে হবে, অপ্রয়োজনে রোদে বের হওয়া এড়িয়ে চলতে হবে এবং সম্ভব হলে ছায়াযুক্ত বা শীতল স্থানে অবস্থান করতে হবে।