ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

এনবিআর অধ্যাদেশ সংশোধনের প্রস্তাবনা দেওয়া হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি- সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভাজন নিয়ে জারি করা অধ্যাদেশে সংশোধনের সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। রোববার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, ‘এনবিআরকে দুই ভাগ করার বিষয়ে আয়কর ও শুল্ক-ভ্যাট ক্যাডারের কর্মকর্তারা সম্মতি দিয়েছেন, তবে এর পেছনে কিছু কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, যেগুলোর সমাধানে সরকারপ্রধানের গঠিত উপদেষ্টা কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে।’

ফাওজুল কবির জানান, বিভাজনের ফলে গঠিত দুই বিভাগে সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগে সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করার সুপারিশও করা হবে। তবে সেই নিয়োগ শুধু শুল্ক ও আয়কর ক্যাডারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, আবার প্রশাসন ক্যাডারের আধিপত্যকেও প্রতিরোধ করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে পাঁচ সদস্যের এই কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফাওজুল কবির খান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

উপদেষ্টা বলেন, ‘এনবিআরের সাম্প্রতিক আন্দোলনের পেছনে প্রশাসন ক্যাডার ও অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বই মূল কারণ। কিন্তু এনবিআরকে বিভাজনের পরই কেন এই বিরোধ আরও প্রকট হলো, সেটি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, অধ্যাদেশে বেশ কিছু অস্পষ্টতা এবং কৌশলগত ত্রুটি রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘উপযুক্ত যোগ্যতা’ শব্দটি ব্যবহৃত হলেও, সেই যোগ্যতা কোন ক্যাটাগরির রাজস্ব অভিজ্ঞতা হবে, তা নির্দিষ্ট করা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এনবিআর নামটাই এখন জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই এনবিআর নামটি রাখার প্রস্তাব আমরা দিচ্ছি না।’

আন্দোলনের ফলে অর্থনীতি ও রাজস্ব সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়েছি, এনবিআরের অনেক কর্মকর্তা এখনো ‘গো স্লো’ পদ্ধতিতে কাজ করছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে, এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।’’

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে ধরনের রিপোর্টে বাংলাদেশের মন্দার ঝুঁকি বলা হয়েছে, সেগুলো পুরোনো তথ্যের ভিত্তিতে করা। বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।’

এনবিআরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘তাদের জন্য কোনো ‘অভয়বার্তা’ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তারা শিশু নয়, বরং এখন তাদের উচিত নিজেদের কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকারের আস্থা ফিরে পাওয়া।’’

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, কমিটি ইতোমধ্যে রাজস্ব কর্মকর্তাদের সংগঠন, এনবিআর, সংস্কার কমিশন ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে পাঁচবার বৈঠক করেছে। সামনে তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে আয়কর ও ভ্যাট কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে।

শেষে উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা আমাদের বলেছেন, এনবিআরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন এত দেরি হলো। সরকার গণতান্ত্রিক পথে এগোচ্ছে বলেই এত ধৈর্য দেখিয়েছে।’