ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। এবার পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও ৫-০ ব্যবধানে জিতে নিল অস্ট্রেলিয়নরা। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৩ উইকেটে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে তারা। এতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ানরা দেশে ফিরছে ৮-০ ব্যবধানের জয়ের অনন্য সাফল্য নিয়ে। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মিচেল মার্শ হাসিমুখে বললেন, ‘সিরিজের আগে ভাবতেও পারিনি ৫-০ হবে।’ সিরিজের সব ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সব ম্যাচেই টসও জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। এতে তাদের নাম উঠে গেছে রেকর্ড বইয়ে।
নিজেদের সুদীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসে এক সফরে কোনো ম্যাচ না হেরে বা ড্র না করে অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের কীর্তি গড়েছে। ২০০৫ সালের নিউজিল্যান্ড সফরেও আটটি জয় ছিল তাদের। তবে সঙ্গে ছিল একটি ড্র। অবশ্য বিশ^রেকর্ড ছুঁতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে ভারত কোনো ম্যাচ না হেরে বা ড্র না করে জিতেছিল ৯ ম্যাচ! সেন্ট কিটসে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকালে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয় ১৭৩ রানে। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে কার্যকর কয়েকটি ইনিংস দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেয় তিন ওভার বাকি রেখেই।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া চার ওভারের মধ্যেই হারায় দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং (১১) ও শেই হোপকে (৯)। রভম্যান পাওয়েলের চোটে শেষ সময়ে দলে যুক্ত হওয়া কেসি কার্টি তিনে নেমে ফেরেন ১ রানেই। শেরফেইন রাদারফোর্ড পাল্টা আক্রমণে দলকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবে ১৭ বলে ৩৫ রান করে তিনি বোল্ড হয়ে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে। এরপর দলকে টেনে নেন মূলত শিমরন হেটমায়ার।
পঞ্চম উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়েন তিনি জেসন হোল্ডারের (২০) সঙ্গে, ইনিংসের যা সর্বোচ্চ জুটি। জ¦লে উঠতে পারেননি রোমারিও শেফার্ড। একটি করে ছক্কা ও চার মেরে ১৫ রানে ফেরেন ম্যাথু ফোর্ড। তিনটি করে চার ও ছক্কায় হেটমায়ার করেন ৩১ বলে ৫২। শুরুর ২ উইকেট নেওয়ার পর এই হেটমায়ারকেও ফিরিয়ে ম্যাচের সেরা বেন ডোয়ার্শিস। অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়ার শুরুটাও ছিল বাজে। মিচেল মার্শ (১৪) ও জশ ইংলিস (১০) দ্রুত ফিরে যান। আগের ম্যাচের নায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আউট প্রথম বলেই। ২৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তবে এই সিরিজের ধারা মেনে উইকেট পতনের মধ্যেও তাদের আক্রমণের স্রোত বইতে থাকে। সিরিজে তিনটি ফিফটি করা ক্যামেরন গ্রিন ১৮ বলে করেন ৩২।
তৃতীয় ম্যাচে বিস্ফোরক সেঞ্চুরির পর চতুর্থ ম্যাচে বিশ্রামে থাকা টিম ডেভিড এদিন একাদশে ফিরে ৪ ছক্কায় ৩০ করেন স্রেফ ১২ বলে। প্রথম ম্যাচে ফিফটি দিয়ে অভিষিক্ত মিচেল ওয়েন শেষ ম্যাচেও দেখান ব্যাটের ধার। তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৭ করেন তিনি ১৭ বলেই। লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে বাকি পথটা পাড়ি দেন অ্যারন হার্ডি (২৮*)। সব ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক মার্শ বললেন, চতুর্থ ম্যাচ জয়ের পর শেষটিও জিততে মরিয়া ছিলেন তারা। মার্শ বলেন, ‘সিরিজের আগে ভাবতেও পারিনি ৫-০ হবে। তবে আমরা পুরো সিরিজে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছি। চতুর্থ ম্যাচের পর দল হিসেবে আমরা এটা আলোচনা করেছি যে, অস্ট্রেলিয়ার কোনো দল আগে সব ম্যাচ জয়ের কীর্তি গড়তে পারেনি।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ধাক্কা হজম করার সময় খুব বেশি পাচ্ছে না।
পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ যে দুয়ারেই দাঁড়িয়ে। প্রথম ম্যাচটি ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ সময় আগামী শুক্রবার সকাল ৬টায়। এরপর আছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও। অস্ট্রেলিয়া দেশের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সিরিজ শুরু ১০ অগাস্ট।