সিলেটের বিশ^নাথ উপজেলার আলোচিত স্কুলছাত্র সুমেল মিয়া (১৮) হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদ- ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আরও ১৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহীন এই রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিলেটের পাবলিক প্রসিকিউটর আশিক উদ্দিন এবং অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন।
মামলার মোট ৩৪ জন আসামির মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদ- এবং সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের মধ্যে ১৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার আগে গত ১৩ জুলাই মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয় এবং আদালত ৩০ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে ওইদিন ৩০ জন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১ মে, বিশ্বনাথ উপজেলার চৈতননগর গ্রামের চাউলধনী হাওরে জমিসংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকা- সংঘটিত হয়। স্থানীয় শাহজালাল হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সুমেল মিয়াকে গুলি করে হত্যা করে প্রতিপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৈতননগরের নজির উদ্দিনের জমি থেকে রাস্তা নির্মাণের জন্য জোরপূর্বক মাটি কাটতে চেয়েছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম। এতে জমির মালিক নজির উদ্দিন, তার ভাইপো সুমেল মিয়া ও স্বজনরা বাধা দেন। একপর্যায়ে কথাকাটাকাটির মধ্যে সাইফুল আলম গুলি ছোড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সুমেল এবং আহত হন তার বাবা ও চাচা।
পরদিন নিহত সুমেলের চাচা বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রম শেষে অবশেষে তিন বছরের মাথায় মামলার রায় ঘোষণা হলো।
সুমেল মিয়ার পরিবার জানান, ‘এই রায়ে আমরা কিছুটা হলেও শান্তি পেয়েছি। ন্যায়বিচার হয়েছে। এলাকাবাসীর মতে, এই রায় দেশে আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।