আগের দিনই সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে টেস্টে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়ে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যান তাইজুল ইসলাম। এবার বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ২৫০ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করলেন এই অভিজ্ঞ স্পিনার। শুধু তাই নয়, বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে গড়লেন বিশ^ রেকর্ডও। বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে টেস্টে ইতিহাসে দ্রুততম ২৫০ শিকারের রেকর্ড গড়েছেন তাইজুল। অবশ্য এই রেকর্ডে তিনি একা নন। স্পর্শ করেছেন তিনি বাঁহাতি স্পিনের গ্রেট এবং বাংলাদেশের সাবেক স্পিন বোলিং কোচ রাঙ্গানা হেরাথকে। টেস্ট ইতিহাসে বাঁহাতি স্পিনে সবচেয়ে কম টেস্টে ২৫০ নেওয়ার কীর্তি এখন যৌথভাবে এই দুজনের। ৫৭ টেস্টে এই ঠিকানা ছুঁলেন তাইজুল। হেরাথেরও লেগেছিল ৫৭ টেস্ট। এমনকি ইনিংসের দিক থেকেও দুজন এখন পাশাপাশি। ২৫০ উইকেট পর্যন্ত যেতে ১০২ ইনিংস লেগেছিল হেরাথের। তাইজুলেরও লাগল ঠিক ১০২ ইনিংসই।
হেরাথের আগে রেকর্ডটি ছিল বিষেন সিং বেদির। সর্বকালের সেরা বাঁহাতি স্পিনারদের একজন বলে বিবেচিত এই ভারতীয় ৬০ টেস্টে ছুঁয়েছিলেন ২৫০। ৬২ টেস্ট লেগেছিল রাভিন্দ্রা জাদেজার। এই টেস্টে একের পর এক মাইলফলকের পথ ধরেই ছুটছেন তাইজুল। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে স্পর্শ করেন তিনি সাকিব আল হাসানের উইকেটের সংখ্যা। দ্বিতীয় ইনিংসে শনিবার সাকিবকে টপকে হয়ে যান দেশের সফলতম টেস্ট বোলার। সাকিবের কাছ থেকে পেয়েছেন অভিনন্দনও। ম্যাচের পঞ্চম দিনটি শুরু করেন তাইজুল ২৪৯ উইকেট নিয়ে। দিনের প্রথম উইকেটটি পেতে বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে। অবশেষে দিনের চতুর্দশ ওভারে তাইজুলের হাত ধরেই আসে উইকেট। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে কাক্সিক্ষত ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার পাশাপাশি নিজে পৌঁছে যান আরেকটি চূড়ায়। ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্ট দিয়ে তাইজুলের টেস্ট অভিষেক হয়। ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসেই নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। সাকিব যত দিন ছিলেন, দেশের বাইরে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি কমই। দেশের মাঠে টেস্টেও তার ভূমিকা ছিল মূলত সাপোর্ট বোলারের।
পরে মেহেদী হাসান মিরাজের উত্থানেও সীমিত হয়ে আসে তার সুযোগ। এখন সাকিবহীন বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের কান্ডারি এই তাইজুলই। তবে দেশের মাঠে বরাবর তিনি বড় ভরসা। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে ৫৪ টেস্ট খেলে ২০০ উইকেট পূর্ণ করেছিলেন সাকিব, ৪৮ টেস্ট খেলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন তাইজুল।
অন্যদিকে, টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার সিরিজ-সেরার রেকর্ডটি সাকিব আল হাসানের। তাকে ছোঁয়ার পথে এক ধাপ এগোলেন তাইজুল ইসলাম। আয়ারল্যান্ড সিরিজে সিরিজ-সেরার স্বীকৃতি পান তিনি। সিরিজের দুই টেস্টে তার শিকার ১৩ উইকেট। এ নিয়ে তৃতীয়বার ম্যান অব দ্য সিরিজ হলেন এই স্পিনার। তিনবার সেরা হয়েছেন মিরাজও। পাঁচবার সিরিজ-সেরা হয়ে বাংলাদেশের রেকর্ড সাকিবের।

