ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় ফুটবল সিরিজে মালয়েশিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এই হারের পর প্রশ্নের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ দলের কোচ পিটার বাটলার ‘হাই-লাইন ডিফেন্স’। কেননা, এই কৌশল অবলম্বনের আগে ঋতুপর্ণা-রুপ্নাদের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। মিয়ানমারকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে এশিয়া কাপে উঠেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। যেখানে তারা জর্ডান-ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ড্র করেছিল। সেই বাংলাদেশ নিজেদের মাটিতে ছিল একেবারে ছন্নছাড়া। যে মালয়েশিয়াকে বছর তিনেক আগে ঢাকায় ৬-০ গোলে হারানোর কীর্তি রয়েছে, সেই বাংলাদেশ ১-০ গোলে হেরেছে।
মালয়েশিয়ার কাছে হারের পর কোনো অজুহাত দাঁড় না করিয়ে কোচ পিটার বাটলার বলেন, ‘সবার আগে আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাইÑ দল নির্বাচন, ফলাফল, ভালো বা খারাপÑ সবকিছুর দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। এটা একদম স্পষ্ট করে দিতে চাই। তাই আমি অজুহাত দিতে আসিনি।’ বাংলাদেশ ১ গোল হজম করে হেরেছে। বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা হাই-লাইন ডিফেন্স করায় মালয়েশিয়ার ফরোয়ার্ডরা গোলের সুযোগ পেয়েছেন। গোলের পেছনে অবশ্য ডিফেন্ডারদের দোষ দেখছেন না কোচ বাটলার। তিনি বলেন, ‘আমরা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। গোলের জন্য আমি কাউকে দোষ দেব না। এটা আমাদের ডিফেন্ডিংয়ের সমস্যার কারণে হয়নি।’ তবে তার এই কৌশল যে ঝুঁকিপূর্ণ, সেটা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘যখন আপনি আক্রমণ করছেন, চাপে রাখছেন আর এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলছেন, যারা খুব গভীরে নেমে খেলে, তখন ঝুঁকি-পুরস্কারের বিষয়টা থাকে।’ বাংলাদেশ নারী দলের কোচ বাটলারের সঙ্গে সিনিয়র ফুটবলারদের দূরত্ব ছিল। সেই সংকট কাটিয়ে এশিয়া কাপ নিশ্চিত করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এখন এশিয়া কাপে ভালো পারফরম্যান্স করে যখন বিশ^কাপের স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা, তখন কোচ বাটলার আবার অস্বস্তির ইঙ্গিত দিলেন, ‘যখন নিজের ক্যাম্পের ভেতরে ও বাইরে এমন কিছু ব্যক্তি থাকে, যারা দলকে বিঘিœত করার চেষ্টা করে, তখন মুনকি আর সাগরিকাদের মতো তরুণ খেলোয়াড়দের এগিয়ে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। আমি ইংল্যান্ড থেকে এসেছি, ওখানকার কাঠামো একদম আলাদা।’ এ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো খেলোয়াড়কে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে দল থেকে বাদ দেওয়া হয় আর আমি যদি একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে চাই, যা ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে আছে, তাহলে সমস্যা থাকা ব্যক্তিদের কারণে সেটা নষ্ট হয়।’ বাংলাদেশ তার অধীনেই দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে। হঠাৎ এই ছন্দপতন কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বাটলার বলেন, ‘আমি সবকিছুর দায় নিচ্ছি, কিন্তু যারা বাইরে থেকে দলকে বিঘিœত করছে, তাদের কারণে দায় নিচ্ছি না। আপনারা জানেন কারা সেই মানুষ। তাদের দলÑ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, কয়েকজন তো আগেও এই গ্রুপে খেলেছে। এটাই বাস্তবতা, এটা হঠাৎ করে যাবে না।’ একই সঙ্গে নিজের অবস্থানে বাটলার তার অবস্থানেই অনড় থাকবেন। ফেডারেশন যদি নতুন কোচ আনতে চায়, তার কোনো দ্বিমত নেই। বাটলার বলেন, “যত দিন আমি আছি, আমি বাংলাদেশের তরুণ খেলোয়াড়দের এগিয়ে নেব এবং যারা বিষাক্ত আচরণ করে, যাদের মনোভাব খারাপ, তাদের সরিয়ে দেব। যদি ফেডারেশন নতুন কোচ চায়, আমার সমস্যা নেই। ইংল্যান্ডে ফিরে যাব। যদি মনে করেন এতে সমস্যার সমাধান হবেÑ ঠিক আছে, নিয়ে আসুন আপনার দুই ‘বন্ধুকে’। যদি আমার সরে যাওয়া লাগে, আমি রাজি। কিন্তু নতুন কোচ এলেও একই সমস্যা হবে।”

