মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আরফান হোসাইন রাফি

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০২:১০ এএম

প্রকৃতি যেখানে আপন করে জড়িয়ে ধরে

আরফান হোসাইন রাফি

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০২:১০ এএম

প্রকৃতি যেখানে আপন করে জড়িয়ে ধরে

ঢাকা শহরের ব্যস্ততা, যানজট আর কংক্রিটের জঞ্জাল থেকে একটু বেরিয়ে একদিনের অবকাশে প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে চাইলে কোথায় যাবেন? খুব বেশি দূরে নয়, ঢাকা থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে, গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরেই পাওয়া যায় সবুজের এক শান্ত নিঃসঙ্গতা, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানের বিশাল শালবন, নীরব পাখির ডাক, প্রজাপতির ওড়া উড়ি আর শিশির ভেজা ঘাসে হাঁটার অভিজ্ঞতা এমন, যেন নিজের সঙ্গে নিজের দেখা হওয়া। কেউ যদি বলেন, ‘এই বনটা আপন মনে কথা বলে’, অবাক হবেন না। কারণ, একবার এই উদ্যানে ঢুকলে সত্যিই মনে হয়, প্রকৃতি এখানে আপন করে জড়িয়ে ধরে। তবে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান শুধুমাত্র একটি বনভূমি নয়, বরং ইতিহাস আর প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যের এক অনন্য সংমিশ্রণ।

লোকমুখে শোনা যায়, একসময় এই এলাকা ছিল ভাওয়াল রাজাদের দখলে। রাজবাড়ীর চিহ্ন এখনো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে উদ্যানের বিভিন্ন প্রান্তে। ব্রিটিশ আমলেও এটি পরিচিত ছিল ‘ভাওয়াল গার্ডেন’ নামে। পরবর্তীতে, ১৯৮২ সালে সরকার এটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। প্রায় ৫,০০০ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই বনাঞ্চলে বর্তমানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ঔষধি গাছের আঁধার। উদ্যানের ভেতরে প্রবেশ করলেই প্রথম যেটা চোখে পড়ে, তা হলো শাল গাছের সারি। অনেকটা যেন সবুজে আঁকা এক সুদীর্ঘ টানেল। গাছের ছায়ায় ঢাকা পথ ধরে হাঁটলে হঠাৎ করেই চোখে পড়বে লালচে মাটির পথ, দুপাশে ঘন ঝোপঝাড়, আর মাঝে মাঝে দেখা যাবে খোলা মাঠ, পুকুর কিংবা পিকনিক স্পট। পাশাপাশি, এখানে আরও দেখা মিলবে নানারকম প্রাণী ও পাখির সমাহার। এখানে রয়েছে চিত্রল হরিণ, বনরুই, খাটাশ, বনবিড়াল, বানর ও নানা প্রজাতির সাপসহ প্রায় ১৩টি স্তন্যপায়ী প্রাণী। আবার মৌসুম ভেদে বিশেষ করে শীতকালে, প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে; তখন উদ্যানের পুকুরঘাটগুলো যেন পাখির মেলায় পরিণত হয়। এই উদ্যানে রয়েছে অনেকগুলো ট্রেইল বা হাঁটার রাস্তা, যেগুলো প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য হতে পারে দারুণ এক অভিজ্ঞতা। ট্রেইলের পাশেই কিছু বসার জায়গা, ছোট কাঠের ঘর এবং একাধিক পুকুর চোখে পড়ে। এ ছাড়াও, উদ্যানের আশপাশে রয়েছে বহু রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট। পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে দিনব্যাপী ভ্রমণের জন্য এসব জায়গা বেশ জনপ্রিয়। চাইলে সরকারি বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় পিকনিকের ব্যবস্থাও করা যায়।

যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে যেতে চাইলে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। মহাখালী বা গাবতলী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তার বাস ধরে রাজেন্দ্রপুর নামলেই হবে। সেখান থেকে রিকশা বা সিএনজি নিয়ে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় উদ্যানে। ব্যক্তিগত গাড়িতেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পৌঁছানো সম্ভব।
যখন যাবেন : ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে বছরের যে কোনো সময়ই ভ্রমণ করা যায়। তবে বর্ষা আর শীতের শুরুতে উদ্যানের প্রকৃতি সবচেয়ে মোহনীয় রূপে ধরা দেয়। হালকা কুয়াশা, ভেজা মাটি আর শালপাতায় জমে থাকা শিশির তখন পুরো বনভূমিকে রূপকথার মতো করে তোলে।

যেখানে থাকবেন : ঢাকা থেকে ভাওয়াল উদ্যানে সারাদিন ঘুরে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা যায়। তবে যদি রাতে থাকার জন্য ভাওয়াল গজারি গড়ের কাছে আছে সারাহ, সোহাগ পল্লি, স্প্রিং ভ্যালি, ছুটি, নক্ষত্রবাড়ি ও জল ও জঙ্গলের কাব্যের মতো বেশ কিছু রিসোর্ট রয়েছে। 

যেখানে খাবেন : ভাওয়াল গড়ের ভেতরে হালকা চা ও নাশতা খাওয়ার ছোট টঙ্গের দোকান ও ক্যান্টিন আছে। তবে পিকনিক বা কোনো অনুষ্ঠানে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে কটেজে রানা-বান্না করার সুযোগ পাওয়া যায়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!