শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০১:৫১ এএম

বনলতা সেন-এর নাটোরে

মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০১:৫১ এএম

বনলতা সেন-এর নাটোরে

ক্লান্ত জীবনের হাহাকার থেকে মুক্তি পেতে, কখনো কি মনে হয়েছে কোনো নিঃশব্দ শহরে হারিয়ে যাওয়ার কথা? যেখানে ইতিহাস হাতছানি দিয়ে ডাকে এবং প্রকৃতি দেয় শান্তির আলিঙ্গন? যদি পেতে চান এমন কোনো স্থানের দেখা, যেতে পারেন নাটোরে। হ্যাঁ, বলছি বনলতা সেনের সেই নাটোরের কথা। জীবনানন্দ দাশের কবিতার সেই নাটোর কিন্তু শুধু কাব্যে নয়; বাস্তবেও আশ্চর্য এক মায়াবী ভূমি। রাজসিক ঐতিহ্য, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ও ইতিহাসে ঘেরা নাটোর প্রতিটি পর্যটকের হৃদয়ে এঁকে দেয় নির্মল শান্তির প্রলেপ।

চলনবিল
রাজকীয় নাটোরের সঙ্গে মিশে আছে প্রকৃতির এক অনন্য বিস্ময় চলনবিল। নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও বগুড়ার কিছু অংশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই জলাভূমি দেশের বৃহত্তম বিলগুলোর একটি। বছরের বেশিরভাগ সময়ই পানিতে ভরপুর এই বিল বর্ষায় হয়ে ওঠে আরও প্রাণবন্ত। এই সময়ে গ্রামগুলোকে ভাসমান দ্বীপ মনে হয়। তবে শীত বা শুকনো মৌসুমেও এর সৌন্দর্য কমে না। তখন ডুবো সড়কগুলো জেগে ওঠে। সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল নিয়ে বিলের বুকে ছুটে চলার সুযোগ তৈরি হয়।

রাজসিক ইতিহাস
নাটোর বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সমৃদ্ধ জেলা। এই জেলাকে বলা হয় ‘উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার’। রেল, সড়ক, এমনকি আকাশপথে সহজেই এখানে পৌঁছানো যায়, তাই এই জেলা ভ্রমণকারীদের জন্য সহজ গন্তব্য হতে পারে।। রাজশাহী থেকে মাত্র এক ঘণ্টার সড়কপথে নাটোরে যাওয়া যায়। নাটোর শহরের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক নানা স্থাপনা। জিরো পয়েন্ট থেকে এক কিলোমিটার দূরে রয়েছে প্রাচীন ‘রানী ভবানীর রাজবাড়ি’। বাংলার সুবেদার মুর্শিদকুলী খানের সময় থেকে শুরু করে বহু রাজ-রাজড়ার হাত ঘুরে তৈরি হয়েছে এই স্থাপত্য। নানান সময়ে এটি প্রাসাদ, দীঘি, মন্দির, উদ্যান ও মনোরম অট্টালিকা দিয়ে একটি সুসজ্জিত নগরীতে পরিণত হয়। নাটোর রাজবংশটি দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল। রাজপ্রাসাদটি এই দুই ভাগের জন্য আলাদা আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছিল। বড় তরফ ও ছোট তরফ নামে দুই ভাগে বিভক্ত এই রাজবাড়ি আজও দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের ভার কাঁধে নিয়ে। পোড়ামাটির টেরাকোটায় মোড়ানো দেয়াল, শ্বেতপাথরের মেঝে আর সুবিশাল উদ্যানজুড়ে ছড়িয়ে থাকা স্মৃতির খ-চিত্র যে কাউকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় অন্য এক কালে।

উত্তরা গণভবন
নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ধারে অবস্থিত ‘উত্তরা গণভবন’ নাটোরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ১৭৩৪ সালে নির্মিত এই প্রাসাদে এখনো রয়ে গেছে রাজকীয় ছোঁয়া। পরে রাজা প্রমদানাথ রায় ১১ বছর ধরে এই রাজপ্রাসাদটি পুনর্নির্মাণ করেন। প্রাসাদটি পুনর্নির্মাণে তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন নির্মাণ উপকরণ ও গাছপালা ব্যবহার করেন। চারপাশে মোটা সীমানাপ্রাচীর, পরিখা ও মূল ফটকে থাকা বিশাল ঘড়ি জানান দেয় প্রসাদটির সময়ের সঙ্গে টিকে থাকার গল্প। এ ছাড়া ভবনের অভ্যন্তরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল-ফল ও ঔষধি গাছ। নিরিবিলি পরিবেশ, ছায়াঘেরা পথে বিশাল বাগানের মধ্য দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হবে যেন রাজপরিবারের কোনো অতিথি হয়ে উঠেছেন অজান্তেই। এই স্থাপনাটি এখন রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হলেও, নির্দিষ্ট সময়ে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

ভ্রমণকারীদের জন্য টিপস
রাজবাড়ি ও উত্তরা গণভবনে ঢুকতে টিকিট কাটতে হয়।
ভ্রমণের আগে খোলা থাকার সময় জেনে নেওয়া ভালো।
বর্ষায় চলনবিলে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সবচেয়ে দারুণ।
নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায় কয়েক ঘণ্টা।
নাটোর শহরে থাকার জন্য মানসম্পন্ন হোটেল ও রেস্টহাউস রয়েছে।
রাজশাহী থেকে দিনে গিয়ে ফিরে আসা সম্ভব।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!