দৈনিক রূপালী বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশের পর বিএনপির নেতাকর্মী ও সিলেটের মানুষ নিশ্চিত হয়ে যান, এম ইলিয়াস আলী আর নেই। তাকে গুমের পর হত্যা করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলামের এই তথ্য প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। তারপরও অনেকে এ নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। দাবি করছিলেন, গুম কমিশন থেকে যেন ইলিয়াস বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য জানানো হয়। কিন্তু তার আগেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান সিলেটে এক জনসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রকাশ্যে ইঙ্গিত দিলেন, ইলিয়াস আলীর ভাগ্যে কী ঘটেছে!
গত ১৬ ডিসেম্বর সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে বিজয় শোভাযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ইলিয়াস আলীর ‘রক্ত’ আমরা বৃথা যেত দেব না। তার ‘রক্তের শপথ’ নিয়ে আমরা সিলেটের প্রত্যেকটি (সংসদীয়) আসনে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য কাজ করব।
তার এ বক্তব্যের পর ইলিয়াস নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে যে সন্দেহ-আশা ছিল, তাও শেষ হয়ে যায়। এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম গুমঘরের প্রধান হোতা আটক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানের বরাতে জানান, জিয়াউলের নেতৃত্বে এম ইলিয়াস আলীকে গুমের পর হত্যা করা হয়েছে। এ কথা জিয়াউল আহসান জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। যা তিনি আদালতকেও জানিয়েছেন। এই সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বিএনপি ও ইলিয়াস ভক্তদের মাঝে হতাশা নেমে আসে। অনেকে তথ্যটি সঠিক নয় উল্লেখ করে তার সন্ধান চান এবং গুমঘর থেকে ইলিয়াস আলীকে বের করে দিতে বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ইলিয়াস আলী ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি। ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য এবং সিলেট অঞ্চলের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। ইলিয়াস আলী ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাজধানী ঢাকা থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন।
এদিকে সিলেটে আযম খানের ওই বক্তব্য প্রদানকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সাবেক সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কয়েস লোদী, জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিবও উপস্থিত ছিলেন।
একই সভায় তিনি জাতীয় সংসদের মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের নাম উল্লেখ করেন। মুক্তাদির ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীও ছিলেন। তার বক্তব্যের পর দুটি প্রসঙ্গই সিলেটে ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে।
আপনার মতামত লিখুন :