বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আবদুল মোমিন, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম

সাতক্ষীরায় ২৫০ মেট্রিক টন আম যাচ্ছে বিদেশে

আবদুল মোমিন, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম

সাতক্ষীরায় ২৫০ মেট্রিক টন আম যাচ্ছে বিদেশে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঋতুরাজ বসন্তের সাথে সাথে পত্রপল্লব ভেদ করে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। এ বছর সাতক্ষীরা জেলার আমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ  করা হয়েছে ৬০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে বিদেশেই রপ্তানি হবে ২০০ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন। বর্তমানে আম বাগান গুলোতে হলুদে সবুজে মিশে একাকার বর্ণিল সাজে সেজেছে প্রকৃতি।

আমের রাজ্য সাতক্ষীরা অঞ্চলের প্রতিটা এলাকায় গাছগুলো এখন আমের মুকুলে ভরে গেছে। এদিকে মধু চাষিরা আমের মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করার জন্য অধিকাংশ আম বাগানে তাদের মৌচাকের বক্স রাখায় সারাদিন মৌমাছির গুন গুন গানের শব্দ উপলব্ধি করছে পথচারীরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে। পাশাপাশি সাতক্ষীরায় ৯০০ থেকে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এর ফলে কদিকে যেমন গ্রামীন অর্থনীতি চাঙ্গা হবে সেই সাথে ইউরোপ-আমেরিকারসহ বর্হিবিশ্বে সাতক্ষীরার সুস্বাদু হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, লেংড়া ও আম্রপলিসহ মোট ২০০ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হবে। এতে একদিকে যেমন আমের রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে তেমনি বৈদিশকমুদ্রা অর্জন করবে সরকার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা জেলায় ১৩০০ নিবন্ধিত আম চাষি কৃষক আছে। আম্রপালি, রূপালি, গোলাপখাস, নিলমবরি, তোতাবরি, কালাপাহাড়, কাঁচামিঠা, সিন্দুরগুটি, হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, লেংড়া ও হিমসাগর, ফজলি, কালাপাহাড়, খিরসরাইসহ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ প্রজাতির আম উৎপাদন হয়ে থাকে। এ বছর ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বেশি।

আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে ৬০ হাজার মেট্রিক টন। আর এর মধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন বাজারে রপ্তানি হবে ২০০থেকে ২৫০ মেট্রিক টন আম। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গত বছরের তুলনায় সাতক্ষীরায় এবার নয়শত থেকে হাজার কোটি টাকা আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আম চাষিরাও বেশ হাসিখুশির মধ্যে রয়েছে।

সাতক্ষীরার তালা, পাটকেলঘাটা, কলারোয়া, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর, আশাশুনি ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার যেদিকেই চোখ যাবে বিভিন্ন অঞ্চচলের বাগান গুলোতে প্রতিটি থুকায় থুকায় ফুটে আছে আমের মুকুল। বাড়ির আঙ্গিনা থেকে শুরু করে প্রতিটি আম বাগানে ও রাস্তার দুই ধারে লাগানো গাছে আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে পুরো এলাকায় সৌরভ ছড়াচ্ছে।

গত বছরের তুলনায় এবার গাছে গাছে প্রচুর পরিমানে আমের মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। তাই বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পারকরছেন কৃষকরা। প্রতিবারের ন্যয় বিদেশে রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

সাতক্ষীরার কৃষিবাড়ির পরিচালক তরুন উদ্যোক্তা কৃষিবিদ রাহাত রাজা জানান, এ বছর তিনি আড়াই বিঘা জমিতে আমের বাগান লিজ নিয়ে গাছে মুকুল আসার পূর্ব থেকে পরিচর্যা করে আসছেন। তার বাগানে গত বছরের তুলনায় বেশি আমের মুকুল এসেছে। আশা করছি গত বছরের তুলনায় তিনি ফলনও বেশি পাবেন এবং লাভবান হতে পারবেন।

তিনি আরও জানান, গত বছর বৈরি আবহাওয়া এবং ব্যাগটেরিয়ার জনিত কারনে আমের মুকুল থেকে গুটি ঝড়ে যাওয়ায় আশানুরূপ ফলন থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। যে কারনে তিনি তেমন একটা লাভের মূখ দেখতে পারেন নি। তবে এবার তার বাগানে যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা ঝড় ঝাপটা না হয় সে ক্ষেত্রে তিনি খরচ খরচা বাদ দিয়ে লাখ দেড়েক টাকা লাভবান হতে পারবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।

সাতক্ষীরার তলা উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা বাই গুনি  গ্রামের আবদুস সমাদ জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে আম্রপলি ও হিমসাগর আম এর চাষ করে পরপর কয়েক বছর লাভবান হাওয়াই এবার আরো চারদবিঘা জমি লিজ  নিয়ে আম্রপালি আম গাছ লাগিয়েছেন এসব গাছ বর্তমানে আমের মুকূলে ভরে যাওয়ায়   কৃষক আব্দুস সামাদ ফুরফুরে মেজাজ আছেন।

অপরদিকে জেলার তালা উপজেলার চৌগাছা গ্রামের প্রভাষক ইয়াসিন লাকি কলেজে শিক্ষাকতার  পাশাপাশি আম্রপলি ও ন্যাংড়া  আমের ৭ বিঘ বাগান করে থাকেন তিনি তার বাগানের রাসায়নিক কোন সার ব্যবহার করেন না। তার আম বিষমুক্ত হওয়ার কারণে এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার আমের কদর বেশি থাকে। এসব আম এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অনলাইনে বিক্রি করে সব থেকে বেশি টাকা উপার্জন করেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কৃষি অফিসার মা. মনির হোসেন জানান, এ বছর আম্রপালি, হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, লেংড়া ও হিমসাগরসহ মোট ২০০ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানির কথা ভাবছেন কৃষি বিভাগ।

তাই রাষাইনিক ও বিষমুক্ত আম তৈরী করতে ও পোকার আক্রমন রোধে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার আম প্রতিবছর দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হওয়ার কারণে সাতক্ষীরাসহ দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!