বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৫, ১০:০২ এএম

সীমার ত্রিভুজ প্রেমের বলি তাজকির

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৫, ১০:০২ এএম

সীমার ত্রিভুজ প্রেমের বলি তাজকির

ছবি: সংগৃহীত

সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি কমিশনার এমএম শাকিলুজ্জামান জানান, সাবেক স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার সীমার সঙ্গে প্রেম করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ইসমাইল হোসেন অভি ও তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাজকীর আহম্মেদকে হত্যা করে।

সীমার মোবাইল থেকে অভি ম্যাসেজ দিয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি তাজকীরকে ঢাকা থেকে খুলনায় ডেকে আনে। পরে অভি ও তার তিন বন্ধু মিলে তাজকীরের হাত-পা বেঁধে মুখে টেপ পেঁচিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও পুরুষাঙ্গে উপুর্যপরি আঘাত করে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে নৃশংসভাবে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পরবর্তীতে লাশ বস্তায় ভরে ভৈরব নদীতে ফেলে দেয়।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভৈরব নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত সীমাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অভি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্নস্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ আরও জানায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি আসিফ মাহমুদ নামে এক যুবক খালিশপুর থানায় তার ফুফাতো ভাই তাজকীরের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে একটি জিডি করে। তাজকীর রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে যে, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে সীমার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে তাজকীর তার চাচাতো ভাই রনির শ্যালিকা সীমার সঙ্গে দেখা করার জন্য ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে খুলনায় আসে। তাজকীর খালিশপুর থানার গোয়ালখালি এলাকায় আসিফ মাহমুদের বাড়িতে এক ঘণ্টা অবস্থান করে।

এরপর তাজকীর খালিশপুর নিউজপ্রিন্ট মিল এলাকায় প্রেমিকা সীমার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় তার বাবা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন।

পুলিশ ওই দিন সীমা, অভির মা লাবনী বেগম ও শহিদুল ইসলাম সাহিদ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খানজাহান আলী থানার ভৈরব নদীর বালুর মাঠ ঘাট থেকে বস্তাবন্দি একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাজকীরের পরিবারের সদস্যরা মরদেহের পরনে থাকা পোশাক দেখে শনাক্ত করে।

সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি কমিশনার জানান, সীমার সঙ্গে তিনবছর আগে ইসমাইল হোসেন অভির পরিবারের অমতে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে অল্পদিনের মধ্যে তাদের ডিভোর্স হয় এবং অভি দেশের বাইরে চলে যায়।

এই সুযোগে তাজকীরের সঙ্গে সীমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ডিভোর্সের ৭-৮ মাস পরে অভি দেশে ফিরে এসে সাবেক স্ত্রী সীমার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের মধ্যে পুনরায় সম্পর্ক তৈরি হয়।

এ সময় ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় যা একমাত্র সীমা জানত। সীমা একই সঙ্গে দুটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দুই প্রেমিকের সাথে সম্পর্ক চলমান রাখে, যাতে কেউই বিষয়টি বুঝতে না পারে।

 অভি আর সীমার নতুন করে সম্পর্কের বিষয়টি তাদের উভয় পরিবারের লোকজন জানলেও তাজকীরের সঙ্গে প্রেমের বিষয়টি অপ্রকাশ্যে থেকে যায়।

কিন্তু ঘটনা পরিক্রমায় অভি সীমার সঙ্গে তাজকীরের প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে যায়। এটা নিয়ে সীমা এবং অভির মধ্যে ঝগড়া হতে থাকে।

এদিকে, অভি সীমার প্রেমিক তাজকীরকে শায়েস্তা করার জন্য সীমার ব্যবহৃত গোপন মোবাইল ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাজকীরকে খুলনায় আসতে বলে।

তাজকীর খুলনা এলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অভি তার বন্ধুদের সহায়তায় তাকে অপহরণ করে নিজ বাসায় নিয়ে যায়। অভিসহ চারজন মিলে তাজকীরকে হত্যা করে।

এরপর বস্তা কিনে লাশ বস্তায় ভরে ইজিবাইকে করে ভোর রাতে হার্ডবোর্ড খেয়া ঘাটে নিয়ে যায়। সেখান থেকে আগেই ভাড়া করে রাখা ট্রলার যোগে দৌলতপুর যাওয়ার দিকে নদীর মাঝখানে নিয়ে লাশ ফেলে দেয়।

পুলিশ আরও জানায়, এর আগে গ্রেপ্তার সীমা, লাবনী ও সাহিদ কারাগারে রয়েছে। সাহিদ হত্যার পর লাশ বহনের কাজে ব্যবহার করা ইজিবাইকের চালক।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত অভি’র বন্ধু মশিউর রহমান জিতু ও রিয়াদ কাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মূল আসামি ইসমাইল হোসেন অভিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি কমিশনার আরও বলেন, তাজকীর হত্যার নৃশংসতা যেন সিনেমাকেও হার মানিয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!