ঢাকা সোমবার, ০৫ মে, ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ে রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া, ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৫, ১২:২০ পিএম
ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বড় নুনতোর গ্রামে দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিবার অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পায়নি। উল্টো ঠিকাদারের নিযুক্ত লোকজন কাজ ফেলে রাস্তা অচল করে রাখার হুমকি দিচ্ছে গ্রামবাসীকে।

সরেজমিনে গিয়ে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাস্তায় নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বালিয়াডাঙ্গী এবং রাণীশংকৈল উপজেলার মাঝ বরাবরে গ্রামের ভেতর হওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষের তদারকি ছাড়াই খেয়াল খুশিমতো রাস্তা নির্মাণের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসব অনিয়ম বন্ধ করে ভালো মানের রাস্তা নির্মাণের দাবি এলাকার মানুষের।

আসাদুজ্জামান শান্ত নামে এক যুবক অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রথমে বালুর পরিবর্তে মাটির ব্যবহার করেছে ঠিকাদারের লোকজন। গ্রামের লোকজন বাধা দিলেও তারা কথা কানে নেয়নি। এখন নিম্ন মানের খোয়া ফেলছে রাস্তায়। যেগুলো হাত দিয়ে ভাঙা যাচ্ছে। এভাবে রাস্তা পাকাকরণ হলে তো দেড় দুই বছর পর রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে।’

ধনীবুল্লাহ নামে এক বৃদ্ধ জানান, ‘শুনেছি ঠিকাদার নাকি দূরের। কাজটা আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলীকে একাধিকবার অভিযোগ জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি। সবাই যেন, টাকা খেয়ে মুখে কুলুপ এঁটে দিয়েছে।’

জানা গেছে, প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে রংপুরের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানীশংকৈল উপজেলার  কাশিপুর ইউনিয়নের বড় নুনতোর গ্রামের ভেতর থেকে দক্ষিণ পার্শ্বে ইটভাটা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ কাজের কার্যাদেশ পায়। ওই প্রতিষ্ঠান পরে স্থানীয় এক ইটভাটার মালিকের কাছে কাজটি বিক্রি করে দেয়। আবু সাইদ নামে ইটভাটা মালিক এই কাজটি বাস্তবায়ন করছেন নিজের ভাটার নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে।

বক্তব্য চাইতে গেলে আবু সাঈদ একাধিকবার টাকা-পয়সা দিয়ে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘কাজটা তো কিনে নিয়েছি, কিছু লাভ তো করতেই হবে।’

নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন রাস্তা নির্মাণকাজটির দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান। আর রাণীশংকৈল উপজেলা প্রকৌশলী আনিছুর রহমান জানান, ‘কাজটি অনেক দূরে এবং ৩ দিন অফিস ছুটি থাকায় দেখাশোনা করা সম্ভব হয়নি। তবে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।’