ঢাকা মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫

প্রতারণার অভিযোগে নারী চিকিৎসকে প্রকাশ্যে মারধর  

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৫, ০৯:৩৭ এএম
 চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে টেনেহিঁচড়ে প্রকাশ্যে মারধর করেন কয়েকজন নারী। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া শহরের ব্যস্ত সড়কে নারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে টেনেহিঁচড়ে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। 

সোমবার (০৫ মে) দুপুরে শহরের অর্জুনদাস আগরওয়ালা সড়কে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের মারধর থেকে স্ত্রীকে বাঁচাতে এসে আক্রমণের শিকার হন তার স্বামী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মাসুদ রানাও।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে চিকিৎসক শারমিন সুলতানা রিকশাযোগে চেম্বারে যাওয়ার সময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ১৫-২০ জন নারী তার ওপর চড়াও হন। তারা চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে তাকে রাস্তায় নামিয়ে আনেন এবং মারধর করেন। এ সময় কেউ কেউ তার পোশাক ছিঁড়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন। 

মারধরে অংশ নেওয়া একাধিক নারী অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসা নিতে এলে ওই নারী চিকিৎসক চাকরি দেওয়া কথা, বিদেশে পাঠানোর কথাসহ নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তিনি চাকরি দিতে পারেননি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।

ঘটনার ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একদল নারী শারমিন সুলতানাকে বেধড়ক মারধর করছেন এবং পোশাক ধরে টানাটানি করছেন।

লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কয়েকজন কর্মচারী জানান, তারা ঠেকানোর চেষ্টা করলে দল বেঁধে নারীরা হামলা চালান। চিকিৎ সককে বেদম মারধর করেছেন তারা। তাকে লোকজনের সামনে যেভাবে অপদস্থ করা হয়েছে, সেটি কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। তাদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, পুলিশকে জানাতে পারতেন।

ওই নারী চিকিৎসকের স্বামী মাসুদ রানা কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনি বলেন, তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তার স্ত্রী কখনো কোনো দিন মেহেরপুরে যাননি। এমনকি নারীরা যে নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছেন, তার নামের সঙ্গে পুরোপুরি মিল নেই। 

মাসুদ রানা আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে অপহরণ করে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আমার পোশাক ছিঁড়েও মারধর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অন্তত ১০ জন চিকিৎসক থানায় যান। জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাসিমুল বারী বাপ্পী বলেন, ‘ঢাকা থেকে শীর্ষ চিকিৎসকেরা ফোন করেছিলেন। এরপর আমরা থানায় এসেছি। চিকিৎসকদের এভাবে মারধর করা কাম্য নয়।’