চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভায় ভূগর্ভস্থ পানির সরবরাহ লাইনের পাইপ ফেটে গিয়ে বিপুল পরিমাণ পানি অপচয় হচ্ছে।
বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও পৌর কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও উদাসীনতায় হতাশ এলাকাবাসী। এতে একদিকে যেমন পানি সংকটের আশঙ্কা বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষিজমি ও সড়কপথও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরচর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের বিল্লাল মেলাকারের জমির পার্শ্বের রাস্তা দিয়ে যাওয়া পানি সরবরাহ লাইনের মূল পাইপ ফেটে পানি টানা ভাবে বের হয়ে জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, প্রতিদিন এভাবে পানি বের হতে থাকলে তাদের কৃষি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
অন্যদিকে, ৫নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ানজীকান্দি গ্রামের সাবেক কাউন্সিলর আ. ওয়াদুদের বাড়ির সামনে সড়কের নিচ দিয়ে যাওয়া পাইপ ফেটে গিয়ে পুরো রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে পথচারী ও যানবাহনের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই অবস্থা প্রায় দুই মাস ধরে চললেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সফিকুল ইসলাম, সুমন আহম্মেদ, ইমরান হোসেন’সহ একাধিক বাসিন্দা জানান, ‘প্রায় দুই মাস ধরে পাইপ ফেটে পানি বের হচ্ছে। বারবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। পানির চাপে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সড়কে কাদা ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।’
তারা আরও বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে এমনিতেই পানি সংকট দেখা দেয়। এভাবে পাইপ ফেটে প্রতিনিয়ত পানি অপচয় হলে পুরো পৌরসভায় পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’
স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও সমাজকর্মীরা জানান, ছেংগারচর পৌরসভায় পুরোনো ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে প্রায়ই পানি সরবরাহ লাইনে ফাটল দেখা দেয়। কিন্তু প্রতিবারই সমাধান দেরি হওয়ায় সমস্যার গভীরতা বাড়ে।
তারা পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধু মেরামত করলেই চলবে না, বরং পানি সরবরাহ ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ নিয়মিত ও কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুত হেল্পলাইন চালু করে জনগণের অভিযোগ দ্রুত গ্রহণ ও সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে।
পৌর এলাকার বাসিন্দারা মনে করেন যদি সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে পৌরসভার জনগণকে মারাত্মক পানি সংকটের মুখে পড়তে হবে। তাই তারা দ্রুত কার্যকর ও টেকসই সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ছেংগারচর পৌরসভায় ভূগর্ভস্থ বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা অপারেটর মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ‘মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশের জটিলতার কারণে পাইপ মেরামতের কাজ বিলম্বিত হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে। আশা করছি, অল্পকিছু দিনের মধ্যেই এই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।’
এদিকে পৌর প্রশাসক মাহমুদা কুলসুম বলেন, ‘নতুন করে কয়েকটি স্থানে পাইপ ফেটে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পাইপ মেরামতের কাজ সম্পন্ন করে স্বাভাবিক পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :