ঢাকা বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত জসিমের

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ১০:৩৪ এএম
মা-বাবার সঙ্গে জসিম উদ্দিন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তে বুরাবার গ্রামের দিনমজুরের ছেলে জসিম উদ্দিন। চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় সফল হলেও অর্থের অভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি।

জসিম উদ্দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ‘ডি’ ইউনিটে ৪৪৭তম মেধাক্রমে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া তার পক্ষে এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

জসিমের বাবা তসলিম উদ্দিন একজন দিনমজুর এবং মা মহসিনা বেগম গৃহিণী। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছোট জসিম।

বড়পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও সমিরউদ্দীন স্মৃতি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন জসিম।

ছোটবেলা থেকে দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাসের অধিকারী জসিম৷ অভাব ও সংসারের টানাপোড়েনকে সাথে নিয়ে স্কুল ও কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে আর্থিক সংকটের কারণে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। 

জসিম উদ্দিন বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল প্রশাসন ক্যাডার হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও এখন পরিবারের টানাপোড়েনে সেই স্বপ্ন থমকে গেছে। আগামী ২০ মে ভর্তির শেষ তারিখ। এখনো ভর্তির টাকা জোগাড় হয়নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সুবিধা না থাকায় ভর্তি হওয়ার পরে মেস থেকে পড়াশোনা করতে হবে।

জসিমের বাবা তসলিম উদ্দীন জানান, স্কুল-কলেজের পড়াশোনা করার সময় একসাথে এত টাকা লাগেনি। অল্প করে খরচ ছিল, দিনমজুরি করে চালিয়েছি। এখন একসাথে ভর্তির টাকা, মেসে থাকতে হবে। ভাড়া, খাওয়া খরচ সবমিলিয়ে এত টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। ভিটেবাড়ী ছাড়া কোনো সম্পদ নেই যে, বিক্রি করে ছেলের পেছনে খরচ করব।

প্রতিবেশী মাজেদুর রহমান বলেন, জসিমের বাবা-মা অনেক কষ্ট করেন। আমরা চাই সে আরও বেশি সফলতা অর্জন করুক। আপনারা সবাই তার পাশে থাকবেন৷

বড়পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নগেন্দ্র নাথ পাল বলেন, জসিম পড়াশোনা করেছে অনেক কষ্ট করে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিটা টাকার জন্য আটকে গেছে। সবাই এগিয়ে আসলে ছেলেটার ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে। আমরাও স্কুল থেকে চেষ্টা করছি।

এদিকে সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতা করা হবে।

ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ভর্তির জন্য সহযোগিতা চান জসিমের বাবা ও মা। তাদের অনুরোধ এই দুঃসময়ে ছেলের স্বপ্ন পূরণে মানবিক মানুষরা যেন এগিয়ে আসেন সহযোগিতা করতে।