ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

রাঙামাটিতে গণমাধ্যমকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ০৮:৫৯ এএম
বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ হাসপাতালে গিয়ে কামালের খোঁজখবর নেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটিতে রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও রূপালী বাংলাদেশের সাংবাদিক এম. কামাল উদ্দিনের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন জেলা যুবলীগ নেতা মিলন নন্দী নান্টু। 

বুধবার (১৪ মে) বেলা ১১টার দিকে শহরের দক্ষিণ কালীন্দিপুর এলাকার বাজারফান্ড প্রশাসন ভবনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত হন সাংবাদিক কামাল। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাঙামাটি সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মীদের বরাতে জানা যায়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বাজারফান্ড প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলায় সংস্কারকাজ চলছিল। কাজটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করছে জেলা পরিষদ। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পটির ঠিকাদারি কাজ একজন পাহাড়ি ঠিকাদারের নামে নিলেও প্রকৃতপক্ষে তা নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন যুবলীগ নেতা নান্টু।

হামলার শিকার কামাল উদ্দিন জানান, ভবনের তৃতীয় তলায় পাকা দেয়াল ভাঙার সময় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই কাজ চলছিল, ফলে ওপর থেকে ইটপাটকেল নিচে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা তৈরি হয়। এ সময় নিচতলায় রিপোর্টার্স ইউনিটির অফিসে প্রবেশকালে ওপর থেকে পড়ে আসা ইটের আঘাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। এরপর নিরাপত্তার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।

প্রায় ঘণ্টাখানেক পর মিলন নন্দী নান্টু ৫-৭ জন শ্রমিকসহ এসে রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে কামাল উদ্দিনের ওপর অতর্কিতভাবে কিল-ঘুষি ও রড দিয়ে হামলা চালান। এ সময় তার কাছ থেকে একটি দামি মোবাইল ফোন ও নগদ এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ ঘটনায় সাংবাদিক কামাল বাদী হয়ে যুবলীগ নেতা মিলন নন্দী নান্টুকে প্রধান আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শওকত আকবর খান বলেন, কামালের কপালে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আপাতত তিনি পর্যবেক্ষণে আছেন।

রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) শাহেদ উদ্দিন বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং প্রাথমিক তদন্ত করে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রেজাউল করিম, সদস্য হাবীব আজম ও মিনহাজ মুরশীদ, জেলা বিএনপি নেতা আলী বাবর, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ হাসপাতালে গিয়ে কামালের খোঁজখবর নেন।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার বলেন, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ন্যক্কারজনক একটি ঘটনা। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।